মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত একাধিক অমুসলিম প্রবাসী রমজানের পবিত্রতা ও ঐক্যের আবহ অনুভব করতে নানা উপায়ে অংশ নিচ্ছেন। মুসলিম বন্ধুদের সঙ্গে রোজা রাখা, ইফতারে যোগ দেওয়া এবং প্রকাশ্যে খাবার না খাওয়ার মাধ্যমে তারা সংহতি ও বোঝাপড়ার এক সুন্দর উদাহরণ সৃষ্টি করছেন। ১৭ মার্চ এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে খালিজ টাইমস।
দুবাইয়ের এক ব্রিটিশ শিক্ষিকা সোফি মিড বলেন, ‘আমার শিক্ষার্থীরা রোজা রেখে স্কুলে আসে। তাদের অভিজ্ঞতা বোঝার জন্য আমিও রোজা রাখা শুরু করি।’ তিনি বলেন, ইফতারের সময় খেজুর, তাহিনির সঙ্গে খেজুর এবং এক কাপ কারাক চা তার পছন্দের খাবার হয়ে উঠেছে। সোফি আরও জানান, রমজান মাসে তিনি তার আবায়া সংগ্রহ থেকে পোশাক বেছে নেন। ‘আমি সাধারণত সংযত পোশাক পরিধান করি, তবে রমজানে বিশেষভাবে সতর্ক থাকি। সৌদি আরবে সাড়ে তিন বছর থাকার ফলে আমার বেশ কিছু আবায়া সংগ্রহ হয়েছে, যা এই মাসে পরিধান করা আমার কাছে স্বাভাবিক ও সম্মানজনক মনে হয়।’
আবুধাবির মার্কেটিং নির্বাহী ডেভিড থম্পসন বলেন, ‘এই রমজান আমার জন্য বিশেষ এক অভিজ্ঞতা। আমি মুসলিম বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার করি, নামাজ আদায়ের দৃশ্য দেখি, যা আমাকে মুগ্ধ করে।’ তিনি জানান, দিনের বেলায় প্রকাশ্যে খাওয়া, পান করা বা ধূমপান থেকে বিরত থাকছেন। ‘অনেকবার লাঞ্চের আমন্ত্রণ পেয়েছি, কিন্তু কখনো কখনো আমি বিনয়ের সঙ্গে তা এড়িয়ে নিজের ডেস্কে খেয়ে নিই।’ ডেভিড এ বছর আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে তার সহকর্মীদের সঙ্গে খাবার বিতরণের আয়োজন করেন। ‘আমরা সবাই মিলে ইফতারের খাবার প্রস্তুত করেছি ও বিতরণ করেছি। সবাই মিলে রমজানের আনন্দ ভাগ করে নেওয়াটা সত্যিই হৃদয়স্পর্শী ছিল।’
দুবাইয়ের মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ অ্যামেলিয়া লিউ বলেন, ‘চার বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করে আমি রমজানের গুরুত্ব গভীরভাবে উপলব্ধি করেছি।’ তিনি জানান, বন্ধুদের আমন্ত্রণে গিয়ে ঐতিহ্যবাহী খাবার, বিশেষ করে বিরিয়ানি খাওয়ার অভিজ্ঞতা তার জন্য চমৎকার ছিল। ‘আমি আগে কখনো এসব খাবার খাইনি। তবে রমজানের সৌজন্যে এর স্বাদ নিতে পেরেছি।’ এছাড়াও, সহকর্মীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে তিনি কয়েকদিন রোজা রেখেছেন। ‘আমি জানতে চেয়েছিলাম, রোজাদাররা সারাদিন কেমন অনুভব করেন।’ তিনি রোজার অন্তর্নিহিত শিক্ষা সম্পর্কে বলেন, ‘এটি শুধু খাবার থেকে বিরত থাকা নয়, বরং আত্ম-অনুসন্ধান ও দরিদ্রদের প্রতি সহমর্মিতা অনুভব করার একটি মাধ্যম।’