ইউরোপ সফরে বাইডেনের সামনে যে ৫ চ্যালেঞ্জ

বৃহস্পতিবার ইউরোপ সফর শুরু করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের মধ্যে তার এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কূটনৈতিক উপায়ে এই সংকট সমাধানের আর কোনো আশা দেখছে না বিশ্ব। তারপরেও এই সফরে রাশিয়াকে থামাতে এবং বিশ্বকে নিরাপদ করতে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বাইডেনকে। বিবিসির এক রিপোর্টে সেগুলোই তুলে ধরা হয়েছে।

ঐক্য প্রদর্শন

রাশিয়া যখন ইউক্রেনে হামলা চালায় তখন প্রাথমিকভাবে পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো সম্মিলিতভাবে এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায়। রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপেও পশ্চিমা ঐক্য দেখা গেছে। ঐক্যমতে পৌঁছাতে যে স্বাভাবিক বাঁধাগুলো পাড় হতে হয়, তা প্রথম দিকে অনেকটাই সহজ ছিল। তবে বিবিসি বলছে, দিন যত যাচ্ছে পশ্চিমাদের মধ্যেও বিরোধ সৃষ্টির সুযোগ বাড়ছে।

জো বাইডেনকে এই সফরের মধ্য দিয়ে বিশ্বকে দেখাতে হবে যে পশ্চিমা দেশগুলোর ঐক্য অটুট রয়েছে। ন্যাটোকে শক্তিশালী করে তুলতে ইউরোপীয় মিত্রদের কনভিন্স করতে হবে বাইডেনকে। তাকে বুঝাতে হবে, এটি কোনো সাময়িক ব্যবস্থা নয় বরঞ্চ এটিই বিশ্বের নতুন বাস্তবতা।

শরনার্থী সংকট

ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে ইউরোপে শরনার্থীর ঢল নেমেছে। মিলিয়ন মিলিয়ন শরনার্থী আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশি দেশগুলোতে। শুধুমাত্র পোল্যান্ডেই রয়েছে ২০ লাখের বেশি শরনার্থী। এতে করে দেশটির অর্থনীতির ওপরে চাপ পড়ছে। যদি মিত্র দেশগুলো তাকে এই চাপ সামলাতে সাহায্য না করে তাহলে তা পোল্যান্ডের সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্টের কারণ হতে পারে। সঙ্গে অর্থনৈতিক সংকটতো রয়েছেই। এই অবস্থায় পোল্যান্ডকে নির্ভরযোগ্য ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে নিশ্চিত করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্যেও একটি ভাবনার বিষয়।

সামরিক সমাধান

রাশিয়াকে থামাতে প্রথম থেকেই ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে আশ্বাস অনুযায়ী সহায়তা দেয়া হয়নি বলেই মনে করে বিবিসি। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্যেও বিষয়টি সহজ নয়। ইউক্রেনের সবথেকে বেশি দরকার এন্টি-এয়ার সাপোর্ট। আর এটি নিশ্চিত করতে গেলে ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ লেগে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। আবার ইউক্রেনের হাতে অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র পাঠাতেও যুক্তরাষ্ট্রকে তার ইউরোপীয় মিত্রদের উপরে নির্ভর করতে হবে। বাইডেন এই সফরে সেটি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

নিষেধাজ্ঞা জোরদার

ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে পশ্চিমাদের নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে রাশিয়া। দেশটি ছেড়ে চলে গেছে প্রায় সকল বিদেশি ব্র্যান্ড। কিন্তু তারপরেও ইউক্রেন থেকে সরে আসতে রাশিয়াকে বাধ্য করতে পারেনি এসব নিষেধাজ্ঞা। বরঞ্চ রাশিয়া তার গতিতেই ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই রাশিয়াকে শাস্তি দিতে নতুন উপায় বের করতে চাপ বাড়ছে মার্কিন ও ইউরোপীয় নেতাদের ওপরে। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নেতারা। কিন্তু বাইডেনকে এখন ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে বসে রাশিয়াকে শাস্তি দেয়ার নতুন উপায় বের করতে হবে।

উদ্বেগের কারণ চীনও

প্রথম থেকেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল ইউক্রেনে যুদ্ধে রাশিয়াকে সমর্থন দিতে পারে পরম মিত্র চীন। সম্প্রতি এক রিপোর্টে জানা গেছে, চীনের কাছে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা চেয়েছে রাশিয়া। এরপর এই উদ্বেগ আরও বেড়েছে। এরইমধ্যে বিষয়টি নিয়ে চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন বাইডেন। তারপরেও বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনকে রাশিয়া থেকে দূরে রাখতে হলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে সম্মিলিতভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। সম্ভব হলে এ ধরণের পদক্ষেপের নিন্দা জানাতে আরও কঠিন ভাষা ব্যবহার করতে হবে। রাশিয়াকে সাহায্য করলে চীনের বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো কী ধরণের ব্যবস্থা নেবে সে বিষয়ে সাবধান করতে হবে। জি-২০ সম্মেলনে রাশিয়ার সদস্যপদ নিয়ে চীন যেভাবে মস্কোকে সমর্থন দিয়ে গেছে তাতে পশ্চিমাদের উদ্বেগ আরও বেড়েছে। বাইডেনের সফরে এ বিষয়েও একটি ঐক্যে পৌঁছাতে হবে পশ্চিমা মিত্রদের।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

মাঙ্কিপক্স : কানাডায় শনাক্তের সংখ্যা ৬০০ ছাড়াল

নূর নিউজ

যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার ২১ বছর

নূর নিউজ

এ সপ্তাহেই বরফে ঢেকে যাবে নিউইয়র্ক

নূর নিউজ