ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে হত্যা করলে আল্লাহ যে শাস্তি দেবেন

ব্যক্তিগত স্বার্থ, লোভ, প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে মানুষ একে অপরকে হত্যা করে। এমন হত্যাকাণ্ড বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে বর্তমানে। কোনো একটি হত্যাকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই সংঘটিত হচ্ছে নতুন হত্যাকাণ্ড, প্রাণ হারাচ্ছে নতুন কেউ।

হত্যা, মৃত্যু নতুন নতুন অস্থিরতার জন্ম দেয়। অন্যকে প্রহিংসা পরায়ণ করে তোলে। অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী এসবের সুষ্ঠু বিচারও পান না। হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিকে হাদিসে কেয়ামতের আলামত বলে বর্ণনা করা হয়েছে। কেয়ামতের একাধিক আলামত রয়েছে। তন্মধ্যে হত্যাকাণ্ডও একটি। এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে, রাসূল সা. বলেছেন—

‘কিয়ামতের আগে ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে, ভূমিকম্প বেশি হবে, সময় সংকীর্ণ হয়ে যাবে, ফিতনা প্রকাশ হবে, হত্যাকাণ্ড-খুনখারাবি বেড়ে যাবে, সম্পদের আধিক্য হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ১০৩৬)

আরেক হাদিসে রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, ‘শপথ সেই মহান সত্তার! যার হাতে আমার প্রাণ। দুনিয়া ততক্ষণ পর্যন্ত ধ্বংস হবে না (তার আগে) মানুষের কাছে এমন সময় আসবে; হত্যাকারী জানবে না সে কেন হত্যা করছে আর নিহত ব্যক্তি জানবে না তাকে কেন হত্যা করা হয়েছে।

বলা হলো, সেটা কিভাবে হবে? তিনি বলেন, হারাজ (গুজব, হুজুগ, বিবেকহীনতা, মূর্খতা, নির্বুদ্ধিতা, অন্যায় হত্যা, বিচারহীনতা ও সত্য-মিথ্যার মিশ্রণ ইত্যাদি)-এর কারণে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৩৯০৮)

এইসব হত্যাকাণ্ডের আগে মানুষ একটু ভাবে না। যেভাবে ইচ্ছা যাকে ইচ্ছা হত্যা করে। অপরাধীর জন্য দেশ, সমাজের আইনে শাস্তি নির্ধারিত। এছাড়াও অপরাধীর জন্য পরকালে রয়েছে চিরস্থায়ী জাহান্নামের হুঁশিয়ারি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন—

وَ مَنۡ یَّقۡتُلۡ مُؤۡمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهٗ جَهَنَّمُ خٰلِدًا فِیۡهَا وَ غَضِبَ اللّٰهُ عَلَیۡهِ وَ لَعَنَهٗ وَ اَعَدَّ لَهٗ عَذَابًا عَظِیۡمًا ﴿۹۳

আর যে ইচ্ছাকৃত কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে লানত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আজাব প্রস্তুত করে রাখবেন। (সূরা নিসা, আয়াত : ৯৩)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতের দিন প্রথম বিচার অনুষ্ঠিত হবে মানুষের রক্তক্ষরণ তথা হত্যার ব্যাপারে। (বুখারি, হাদিস, আয়াত : ৬৮৬৪, মুসলিম, হাদিস : ১৬৭৮)

অন্য হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হত্যাকারী কিয়ামতের দিন এমনভাবে উপস্থিত হবে যে, হত্যাকৃত ব্যক্তি হত্যাকারীর মাথা ধরে রাখবে এবং বলবে, হে রব! আপনি একে প্রশ্ন করুন, কেন আমাকে হত্যা করেছে? (ইবন মাজাহঃ ২৬২১, মুসনাদে আহমাদঃ ১/২৪০)

এ জাতীয় আরো সংবাদ

মুসাফির কসর না করে পুরো নামাজ পড়তে পারবে?

নূর নিউজ

বৃষ্টির সময়ের ৬টি সুন্নাহ

নূর নিউজ

তিলাওয়াতের সময় সিজদার আয়াত বাদ দিয়ে পড়া যাবে?

নূর নিউজ