কবরস্থানে কোরআন তিলাওয়াত করা যাবে?

কেউ মারা গেলে তার স্বজনদের কষ্ট পাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে প্রিয়জনের মৃত্যুতে বিলাপ না করে ধৈর্যধারণ করা ইসলামের শিক্ষা। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি যার কোনো প্রিয়জনকে উঠিয়ে নিই আর সে ধৈর্য ধারণ করে এবং নেকির আশা রাখে আমি তাকে জান্নাত দিয়েই সন্তুষ্ট হব।’ (তিরমিজি, হাদিস, ২৪০১)

মৃতের শোকে ইনিয়ে-বিনিয়ে, বুক চাপড়ে কাঁদা, মাতম করা এবং জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলা ইসলামের পদ্ধতি নয়। এ বিষয়ে হজরত আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে শোকে গালে চপেটাঘাত করে, জামার অংশবিশেষ ছিঁড়ে ফেলে এবং জাহিলি যুগের মতো চিৎকার করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (বুখারি, হাদিস, ১২৩৫; মুসলিম, হাদিস, ২৯৬)

আত্মীয়স্বজনের শোক মৃতের কোনো উপকারে আসে না, বরং জীবিতদের আমল দান-সদকাই মৃতদের উপকারে আসে। ইসলামি বিধান অনুযায়ী কেউ মারা যাওয়ার খবর শুনলে ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন পড়তে হয়।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তারা (মুমিনরা) কোন মুসিবতে আক্রান্ত হলে বলে ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আমরা আল্লাহর এবং নিশ্চয় আল্লাহর কাছেই ফিরে যাব)।’ (সুরা বাকারা, আয়াত, ১৫৬)

এছাড়াও মৃতের স্বজন ও প্রতিবেশীদের পাঁচটি কাজ দ্রুত সম্পাদন করতে হয়। কাজগুলো হলো, গোসল, কাফন, জানাজা, জানাযা বহন ও দাফন।

জানাজা, দাফন-কাফন শেষে মৃতের কবর জিয়ারত, তার জন্য দোয়া, দান-সদকা, কোরআন তিলাওয়াতই তার উপকারে আসে। এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন মানুষ মারা যায়, তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তিনটি আমলের উপকার সে ভোগ করতে পারে— এক. সদকায়ে জারিয়া। দুই. এমন জ্ঞান, যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়। তিন. ওই সুসন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে। ’ (মুসলিম, হাদিস, ১৬৩১)

আরেক হাদিসে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, একব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, আমার বাবা ইন্তেকাল করেছেন এবং ধন-সম্পদ রেখে গেছেন কিন্তু অসিয়ত করে যাননি। আমি যদি তার পক্ষ থেকে সদকা করি, তবে কি তার (গোনাহের) কাফফারা হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। (মুসলিম, হাদিস, ১৬৩০)

এছাড়াও কোরআন তিলাওয়াত করে এর সওয়াব মৃতের রুহে পৌঁছে দেওয়া যায়। কেউ কবরস্থানের পাশে কোরআন তিলাওয়াত করতে চাইলে করতে পারবে, তবে কবরের পাশে বা কবরস্থানে গিয়ে কোরআন মাজীদ তিলাওয়াত করা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়। কারণ সাহাবা-তাবেয়ীন থেকে এমন আমলের প্রমাণ পাওয়া যায় না।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

২০২৪ সালের শবে বরাত, রমজান, শবে কদর ও ঈদ কবে?

নূর নিউজ

জাতীয় মসজিদের খতিবকে নিয়ে যা লিখলেন আবুল হাসানাত আমিনী

নূর নিউজ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২ মামলায় ‘শিশু বক্তা’ মাদানীর বিচার শুরু

নূর নিউজ