কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা শুরু, থাকছে বাংলাদেশি ৪৫ প্রকাশনা

পর্দা উঠলো ৪৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার, চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার কলকাতা সংলগ্ন সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে বইমেলার স্থায়ী প্রাঙ্গণে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

এবারের বইমেলার ফোকাল থিম কান্ট্রি ‘গ্রেট ব্রিটেন’ (ইউনাইটেড কিংডম)। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স এলিস সিএমজি, ব্রিটিশ কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার মহানির্দেশক অ্যালিসন ব্যারেট এমবিই। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পৌর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, কৃষিমন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়।

পরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কলকাতার বইমেলা বিশ্বমেলায় পরিণত হয়েছে। এককালে ছোট এক টুকরো জায়গায় গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বইমেলা হতো। এখন যেখানে মেলা হচ্ছে, অনেক জায়গা রয়েছে। এই বইমেলা একদিন বিশ্বের এক নম্বর হবে। কারণ বাংলাই পথ দেখায়। সময় বের করে নতুন প্রজন্মকে বই পড়ার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী।

এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই নিজের লেখা আটটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন মমতা। তিনি বলেন, ১৯৯৫ সাল থেকে আমার বই বেরোয়। আমার প্রথম বই ‘উপলব্ধি’। আজকের হিসেব ধরলে আমার মোট বই ১৪৩টি। আগামী বছর বইমেলার আগে আরও ৭টি বই লিখব।

অনুষ্ঠানে সাহিত্যিক বাণী বসুকে ‘ড. রমা প্রসাদ গোয়েঙ্কা সিইএসসি সৃষ্টি সম্মান ২০২৪’ সম্মাননা প্রদান করা হয়। প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এই বইমেলা।

অন্য বছরগুলোর মতো এবারও বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, ইতালি, থাইল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, পেরু, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, গুয়াতেমালা, মেক্সিকোসহ বিশ্বের ২০টি দেশ অংশগ্রহণ করছে।

যদিও প্রায় ১২ বছর পর ফের এবারের বইমেলা অংশগ্রহণ করছে জার্মানি। এ ছাড়াও দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব, গুজরাট, আসাম, তেলেঙ্গানা, ওড়িশা থেকেও প্রকাশকরা এই বইমেলায় অংশগ্রহণ করবে। এবারের বইমেলায় বড়, ছোট, মাঝারি, লিটল ম্যাগাজিনসহ সর্বাধিক ১০০০টি স্টল থাকছে।

আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার প্রধান আকর্ষণ কলকাতা সাহিত্য উৎসব। বইমেলার এসবিআই অডিটোরিয়ামে ২৬, ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি এই সাহিত্য উৎসবে অংশগ্রহণ করবে দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত লেখক, সাহিত্যিকরা। এ ছাড়াও আগামী ১৯ জানুয়ারি থিম কান্ট্রি দিবস, ২১ জানুয়ারি শিশু দিবস ও ২৪ জানুয়ারি বরিষ্ঠ নাগরিক দিবস উদযাপন করা হবে।

এদিকে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ‘বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন’ উদ্বোধন করা হয়। এর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন কবি সুবোধ সরকার, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াসসহ মিশনের কর্মকর্তারা। পরে সকলেই বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।

কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিয়ে ভারত সরকার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও কলকাতা বইমেলা কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়ে খলিল আহমদ জানান, এই আন্তর্জাতিক মেলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বিশেষ করে বাংলা বইয়ের প্রমোশন হচ্ছে।

উল্লেখ্য, রিকশা এবং রিকশাচিত্র দিয়ে সাজানো হচ্ছে এবারের বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। ৩,২০০ বর্গ ফুটের এই প্যাভিলিয়নে মোট ৪৫টি (১২টি সরকারি ও ৩৩টি বেসরকারি) স্টল থাকবে।

আগামী ২০ জানুয়ারি কলকাতা বইমেলায় পালিত হবে ‌‘বাংলাদেশ দিবস’। ওইদিন সন্ধ্যায় বইমেলা প্রাঙ্গণের এসবিআই অডিটরিয়ামে আয়োজন করা হবে ‘সংযোগের সেতুবন্ধন : সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনার।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

স্কুলে স্মার্টফোন নিষিদ্ধের আহ্বান করল জাতিসংঘ

নূর নিউজ

জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপপুঞ্জে ভূমিকম্প : জেএমএ

নূর নিউজ

শ্রীলঙ্কায় কারফিউ জারি!

নূর নিউজ