কাদিয়ানী বিরোধী আন্দোলনের মহানায়ক ছিলেন আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী (রহ): আল্লামা রাব্বানী 

আজ (২১ ফেব্রুয়ারী) সোমবার, বেলা ১১ টায় কর্ণপাড়া জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম, সাভার, ঢাকা এর উদ্যোগে জামিয়ার মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের (সাবেক) মহাসচিব, তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের (সাবেক) সভাপতি আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ, এর বর্ণাট্য জীবন-কর্ম ও অবদান শীর্ষক আলোচনা সভা ও দু’আ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ এর মহাসচিব আল্লামা মুহিউদ্দীন রাব্বানী।

সভাপতি তার আলোচনায় বলেন; আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ. হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’ এর মহাসচিব হওয়ার সুবাধে মরহুম মগফুর মহাসচিব বাংলাদেশে আদর্শ শিক্ষা ও সমাজ গঠনে যোগ্য নেতৃত্বের আসন অলংকৃত করেছেন। বার্ধক্য ও অসুস্থতার কারণে কখনো তিনি তার সত্য এবং ন্যায়ের আদর্শ ও মিশন থেকে একটুও পিছ পাঁ হননি। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও তিনি হাদিসের মসনদে বুখারী শরীফের দরস দিয়েছেন এবং হেফাজতের এই ক্রান্তিলগ্নে মহাসচিব হিসাবে কারাবন্দী আলেম ওলামাদের মুক্তির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। একজন প্রকৃত দ্বীনের দাঈ ও উম্মাহ দরদী রাহবার যেমন হওয়ার দরকার আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ. ঠিক তেমন-ই ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ. ইসলাম বিরোধী সকল প্রকার ষড়যন্ত্র ও ষড়যন্ত্রকারীর বিরুদ্ধে সদা লড়াকু সৈনিক ছিলেন। আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ সা. এর সর্বোচ্চ সম্মান ‘খতমে নবুওয়ত’ রক্ষা করার জন্য কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে তিনি আমৃত্যু আন্দোলন করে গেছেন। তিনি কাদিয়ানী বিরোধী আন্দোলনের মহানায়ক ছিলেন। তিনি ছিলেন বাঙ্গালী জাতীর জন্য একজন দক্ষ রাহবার ও অভিভাবক। আজ তাকে হারিয়ে দেশ ও জাতির অপূরনীয় ক্ষতি হয়ে গেলো।

প্রধান আলোচক হিসেবে সাভার উপজেলা উলামা পরিষদ এর সভাপতি মাওলানা ইউসুফ সাদেক হক্বানী বলেন, আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ. বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তিনি একাধারে খতমে নবুওয়াতের সভাপতি, বেফাকের সহসভাপতি, হাইয়াতুল উলিয়ার সদস্য ও দেশের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব ছিলেন। নিকট অতীতে ওনার মতো মেধাবী ও বিচক্ষণ আলেম খুব কম পেয়েছি আমরা। তিনি দীর্ঘ সময় আকাবীরদের সাথে কাজ করেছেন। ওনার মধ্যে আকাবীরদের ঝলক দেখা যেতো। তিনি যে দায়িত্বই পালন করেছেন সেখানে সর্বোচ্চ মেধার ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন।

 

তিনি আরো বলেন, গত এক-দেড় বছর আগে আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ. হেফাজত মহাসচিবের দায়িত্ব পান। দায়িত্ব পেয়ে তিনি শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ. ও আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী রহ. এর দেখানো পথে সংগঠনকে পরিচালিত করে গেছেন। আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ. ছিলেন শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ. এর অত্যন্ত প্রিয় সাগরেদ ও খলিফা। আল্লামা শফী রহ. এর সাথে আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ.এর যে সম্পর্ক ছিলো, তার কোনো তুলনা হয়না। তিনি আজীবন শাইখুল ইসলাম রহ. এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে দ্বীনের খেদমত আঞ্জাম দিয়ে গেছেন। আমরাও আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ. এর পথ অনুসরণ করে আগামীতে হেফাজতে ইসলাম ও খতমে নবুওয়তের কার্যক্রম আরো বেগবান করে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই ইনশাআল্লাহ।

 

এছাড়া বিশেষ মেহমান হিসাবে আনন্দপুর দারুল উলুম, সাভার, ঢাকা এর ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আলী আযম বলেন, আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ. নিজের করা সর্বশেষ প্রোগ্রামে ৩ দফা দাবী জানিয়েছিলেন। আমরা আজকের এই আলোচনা সভা থেকে সেই তিনটি দাবী আবারো জানাচ্ছি। এক : আল্লাহ, রাসূল সা., কুরআন, সুন্নাহ তথা- ইসলাম অবমাননার বিরুদ্ধে সংসদে আইন পাস করতে হবে। দুই : কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। তিন : কারাবন্দী সকল আলেম-উলামা ও তৌহিদী জনতাকে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।

 

তাছাড়া মুফতি ইকবাল হাসান ও মাওলানা হাসান আবরারের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ. ছোট সাহেবজাদা মাওলানা খালেদ বিন নূর, কর্ণপাড়া জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম এর ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আফসার মাহমুদ, সাভার উপজেলা উলামা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী আলী আকরাম, কলমা নূরিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতী আহসান মাহবুব, উম্মুল ক্বুরা জামে মসজিদের খতীব মুফতী আব্দুল্লাহ আল মামুন, রাজাবাড়ি জামিয়া আরাবিয়া ইসলামিয়া এর প্রিন্সিপাল মুফতী ইকবাল হাসান, কর্ণপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতীব মুফতী আব্দুর রহিম, গেন্ডা বাইতুল্লাহ জামে মসজিদের খতীব মাওলানা ইসমাঈল, কর্ণপাড়া বড়বাড়ি জামে মসজিদের খতীব মুফতী সোহাইল আহমাদ, কর্ণপাড়া জামিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা উবাইদুল্লাহ, মুফতী আব্দর রহমান সিরাজী, মাওলানা আঃ হাকিম, মুফতী আলী আশরাফ প্রমুখ।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

বিমানের দুটি ফ্লাইটে জেদ্দা পৌঁছেছে ৮২৯ জন হজযাত্রী

নূর নিউজ

পূজাকালীন সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যেন নোংরা রাজনীতির শিকার না হয়

নূর নিউজ

মাদরাসা খুলে দেওয়ার আহ্বান বেফাক সভাপতির

নূর নিউজ