কুনুতে নাজেলা কী, কখন পড়তে হয়?

ইসলাম এবং মুসলমানেরা বিশেষ কোনো বিপদে পড়লে বিপদ থেকে মুক্তির জন্য কুনুতে নাজেলা পড়ার নিয়ম রয়েছে। শত্রুর থেকে রক্ষা, শত্রুর হেদায়েত কামনা অথবা তার ধ্বংস কামনার জন্য কুনুতে নাজেলা পড়া মুস্তাহাব আমলের অন্তর্ভুক্ত। তবে বিশেষ মুহুর্ত অর্থাৎ কঠিন বিপদ, যুদ্ধকালীন সময় বা এমন বিপদ সংকুল পরিস্থিতিতেই শুধু কুনুতে নাজেলা পড়ার নিয়ম।

কুনুতে নাজেলা পড়ার বিধান রহিত বা বাতিল হয়নি এখনো মুসলমানদের বিপদ বা দুর্যোগকালে ফজরের নামাজে কুনুতে নাজেলা পড়ার নিয়ম রয়েছে। (এলাউস সুনান – ৬/৮১)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিপদের সময় ফজরের নামাজেরর দ্বিতীয় রাকাতে রুকু থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন সময় কুনুতে নাজেলা পড়েছেন। (সহীহ বুখারী-২/৬৫৫, তাহাবী শরীফ-১/১৭৪, সহীহ মুসলিম-১/২৩৭)

হানাফী মাজহাব মতে কাফের, মুশরিক ও জালেমদের পক্ষ থেকে বা আসমানী কোন বিপতের মুখোমুখি হলে কুনুতে নাজেলা পড়া উচিত। (ফাতওয়ায়ে শামী, ২/৪৪৮-৪৪৯)

কুনুতে নাজেলা পড়ার নিয়ম

ফজরের নামাজের ফরজের দ্বিতীয় রাকাতে রুকু থেকে উঠে ইমাম আওয়াজ করে কুনুতে নাজেলা পড়বেন, এ সময় মুসল্লিরা আস্তে আস্তে আমীন বলবেন। দোয়া শেষে নিয়ম অনুযায়ী নামাজের অবশিষ্ট সেজদা, শেষ বৈঠক ইত্যাদির মাধ্যমে নামাজ শেষ করবেন। (এলাউস সুনান – ৬/৮১)

কুনুতে নাজেলা পড়ার বিষয়ে এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাজের সময় সবসময় কুনুত (নাজেলা) পড়তেন না। কোন জাতির জন্য দোয়া বা বদদোয়ার প্রয়োজন হলে ফজরের নামাজের দ্বিতীয় রাকাতে রুকু থেকে মাথা উঠানোর সময় তিনি কুনুতে নাজেলা পড়তেন। (সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস, ১০৯৭, নসবুর রায়াহ, আল মুসনাদুল জামে, আসারুস সুনান, ২/২০)

আরেক হাদিসে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাজের সময় কুনুত পড়তেন না, শুধুই একমাস পড়েছিলেন। এর আগে বা পরে আর এমনটি করতে দেখা যায়নি। সে সময় তিনি কিছু মুশরিকদের জন্য বদদোয়া করার জন্য তা পড়েছিলেন। (মুসনাদে আবী হানীফা বিরিওয়াতে হিসকাফী, হাদীস, ৩৪)

কুনুতে নাজেলা

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَنَا ، وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ ، وَأَلِّفْ بَيْنَ قُلُوبِهِمْ ، وَأَصْلِحْ ذَاتَ بَيْنِهِمْ ، وَانْصُرْهُمْ عَلَى عَدُوِّكَ وَعَدُوِّهِمْ، اللَّهُمَّ الْعَنْ كَفَرَةَ أَهْلِ الْكِتَابِ الَّذِينَ يَصُدُّونَ عَنْ سَبِيلِكَ ، وَيُكُذِّبُونَ رُسُلَكَ ، وَيُقَاتِلُونَ أَوْلِيَاءَكَ اللَّهُمَّ خَالِفْ بَيْنَ كَلِمَتِهِمَ ، وَزَلْزِلْ أَقْدَامَهُمْ، وَأَنْزِلْ بِهِمْ بَأْسَكَ الَّذِى لاَ تَرُدُّهُ عَنِ الْقَوْمِ الْمُجْرِمِينَ اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِينُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُثْنِى عَلَيْكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ، وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَفْجُرُكَ اللَّهُمَّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ، وَلَكَ نُصَلِّى وَنَسْجُدُ، وَلَكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ ، نَخْشَى عَذَابَكَ الْجَدَّ، وَنَرْجُو رَحْمَتَكَ، إِنَّ عَذَابَكَ بِالْكَافِرِينَ مُلْحَقٌ.

বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফিরলানা ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত। ওয়াল মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাত। ওয়া আল্লিফ বাইনা কুলুবিহিম। ওয়া আসলিহ জাতা বাইনিহিম। ওয়াংসুরহুম আলা আদুয়্যিকা ওয়া আদুয়্যিহিম। আল্লাহুম্মালআন কাফারাতা আহলিল কিতাবিল্লাাজিনা ইয়াসুদ্দুনা আন সাবিলিকা। ওয়া ইউকাজজিবুনা রুসুলাকা। ওয়া ইউকাতিলুনা আওলিয়াআকা। আল্লাহুম্মা খালিফ বাইনা কালিমাতিহিম। ওয়া যালযিল আকদামাহুম। ওয়া আনযিল বিহিম বাসাকাল্লাজি লা তারুদ্দুহু আনিল কাওমিল মুঝরিমিন। আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাঈনুকা ওয়া নাসতাগফিরুকা ওয়া নুছনি আলাইকা ওয়ালা নাকফুরুক ওয়া নাখলাউ ওয়া নাতরুকু মাইঁ-ইয়াফজুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা নাবুদু ওয়া লাকা নুসাল্লি, ওয়া নাসজুদু, ওয়া লাকা নাসআ, ওয়া নাহফিদু, নাখশা আজাবাকালঝাদ্দা, ওয়া নারজু রাহমাতাক। ইন্না আযাবাকা বিল কাফিরিনা মুলহিক।’ (বাইহাকি)

এ জাতীয় আরো সংবাদ

মজুতদারের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ

নূর নিউজ

আমানতের খেয়ানত বেড়ে যাওয়া নিয়ে যা বলেছেন মহানবী সা.

নূর নিউজ

বিয়েতে মোহরে ফাতেমি কি দিতেই হয়?

নূর নিউজ