কেসিসি নির্বাচনে হাতপাখার মেয়র প্রার্থীর ২৮ দফা ইশতেহার ঘোষণা

দুর্নীতি ও দূষণমুক্ত মডেল সিটি গড়তে ২৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল ।

আজ ২৮ মে রবিবার বেলা ১১টায় খুলনার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি। হাফেজ আব্দুল আউয়াল বলেন, ইশতেহারে সিটি কর্পোরেশনের সকল ক্ষেত্রে শুধু দুর্নীতি দমন নয়, দুর্নীতি মূলোৎপাটন
কর্মসূচি গ্রহণ, ভেজালমুক্ত খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও ইনসাফপূর্ণ বাজার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি নগর উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, বিগত মেয়রদের দেয়া সব ওয়াদা-প্রতিশ্রুতি ও ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহার অকার্যকর ও অন্তঃসারশূন্য ফাঁকা বুলিতে পরিণত হয়েছে দাবি করে আব্দুল আউয়াল বলেন, আজ খুলনা সিটি বসবাসের অনুপোযোগী একটি
সিটিতে পরিণত হতে চলেছে। শিল্পাঞ্চল খুলনা আজ ধ্বংসের দারপ্রান্তে।

ঘোষিত ইশতেহারে তিনি আরও বলেন, অশুভ কায়েমী স্বার্থবাদী সিন্ডিকেটকে অবশ্যই ভাঙতে হবে। নোংরা রাজনীতির প্রভাব- দৌরাত্ম থেকে খুলনা সিটিকে রক্ষা করতে হবে। জনজীবনে স্বস্তি ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। নগরকে বসবাসোপযোগী শান্তির নগরীতে পরিনত করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন আমূল পরিবর্তনের। দরকার ব্যাপক সংস্কারের। প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগের। প্রয়োজন সৎ, যোগ্য ও আল্লাহভীরু নেতৃত্বের।

সংবাদ সম্মেলনে ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, স্বচ্ছতা আনয়ন, জবাদিহি নিশ্চিতকরণ, শ্বেতপত্র প্রকাশ, নগর বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন, নগর সরকার গঠনে কার্যকর উদ্যোগ, বায়ূ দূষণ নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, পানি সমস্যার সমাধান, নদীদূষণ, শব্দদূষণ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড গঠন, খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণ, পরিকল্পিত খুলনা গঠন, যানজট নিরসন, ওয়ার্ড ভিত্তিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, বিল্ডিং কোর্ডের যথাযথ অনুসরণ, দুর্যোগ সহিষ্ণু নগর গঠন, বাসা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, স্মার্ট পার্কিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ।

এছাড়া ফুটপাত দখলমুক্ত ও পথচারীদের চলাচল উপযোগী করা, আধুনিক মানের পাবলিক টয়লেট গড়ে তোলা, মশক নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা, মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ, খাল, জলাধার
সংরক্ষণ করে জলাবদ্ধতা নিরসণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, নগরস্বাস্থ্য ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, হকার ও ছিনড়বমূল শিশুদের পুনবার্সন, নারীবান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা, নাগরিকদের নৈতিক উনড়বয়ন, যাকাত বোর্ড গঠন এবং সামাজিক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে।

ইশতেহার ঘোষণায় মেয়র প্রার্থী বলেন, বিগত নির্বাচনগুলো স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও জবাবদিহিমুলক না হওয়ায় এখনো জনমনে শঙ্কা, সংশয়, ও উদ্বেগ বিরাজ করছে।

জনগণের সংশয় ও সন্দেহ দূর করতে না পারলে নির্বাচন থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিবে। সাধারণ মানুষ যখন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না, তখন দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। এজন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনকেই নির্বাচনের প্রতি
সাধারণ মানুষকে আগ্রহশীল করে তুলতে হবে।
ইশতেহার ঘোষণায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, দলের খুলনা মহানগর এর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান পরিচালক মোঃ নাসির উদ্দিন, সহকারী পরিচালক মুফতী আমানুল্লাহ, সমন্বয়নকারী মুফতি ইমরান হুসাইন, সহ-সমন্বয়কারী হাফেজ
আসাদুল্লাহ গালীব, নির্বাচনী প্রধান এজেন্ট শেখ হাসান ওবায়দুল করিম, যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক হাসিব গোলদার, উপ সম্পাদক মুফতী শেখ আমিরুল ইসলাম, অর্থ সমন্বয়নকারী আবু গালিব, সহ সম্বয়নকারী রবিউল ইসলাম
তুষার, মিডিয়া সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ আল নোমান, ফেরদৌস গাজী সুমন, গণসংযোগ সমন্বয়কারী মোঃ সাইফুল ইসলাম,সহ-গণসংযোগ সমন্বয়কারী মুহা. মঈন উদ্দিন, সহ মিডিয়া সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল-মামুন, সহ মিডিয়া সমন্বয়ক এম এ সাদী, প্রকাশনা সমন্বয়কারী মাহাদী হাসান মুজতবা, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর সভাপতি এস এম আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম খান, যুবনেতা মুফতি আব্দুর রহমান মিয়াজী, ২৫ নং ওয়ার্ড
কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মোঃ ইমরান হোসেন মিয়া, ১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মোঃ আব্দুর রশিদ সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
নির্বাচনী ইশতেহারের ২৮ দফা নিম্নে দেওয়া হলো:
১. নাগরিক সেবা প্রদানে দশ দফা নীতিগত প্রস্তাবনা ২. নগরীতে ন্যায়ের
শাসনের সাথে নাগরিকসেবা প্রতিষ্ঠা ৩. স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন
৪. শি¶া ব্যবস্থার মান উনড়বয়ন ৫. শিল্পাঞ্চল খালিশপুর পুনরুজ্জীবিতকরণ ও
নতুন শিল্পাঞ্চল গঠন ৬. জননিরাপত্তা নিশ্চিত করণ ৭. নগর প্রশাসন সেবা ও
বিশেষজ্ঞ টিম গঠন ৮. কবরস্থান শ্মশানের উন্নয়নসহ সমাজসেবামূলক কাযক্রম ৯.
আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর নগরী গঠন ১০. দুর্নীতি সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত
নগরী গঠন ১১. কিশোর গ্যাং ও চাঁদাবাজ মুক্ত নগরী গঠন ১২. বয়স্ক সেবা ও
ভাতা প্রদান ১৩. বিদ্যুতের সুব্যবস্থা ১৪. বেকারত্ব নাগরিকত্ব ১৫. মশক
নিধন ও সুপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ১৬. বেকারত্ব দারিদ্র্য বিমোচনে
নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ১৭. শিক্ষা সংস্কৃতিক উন্নয়ন ও সুস্থ বিনোদনের
ব্যবস্থা গ্রহণ ১৮. সংখ্যালঘু ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর মানোনয়ন ১৯. নারী ও
শিশুদের ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ২০. সুপরিকল্পিত নগরী গঠন
২১. মুক্তিযোদ্ধা ও গুণীজন নাগরিক সম্মাননা ২২. সহজলভ্য ও ভেজালমুক্ত
খাদ্য সরবরাহ ২৩. নিরাপদ সড়ক গঠন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ণ ২৪. হোল্ডিং
ট্যাক্স ও বাড়ি ভাড়া কমিয়ে নিয়ে আসা ২৫. পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ও সুপেয় পানি
সরবরাহ ২৬. মসজিদভিত্তিক সমাজ গঠন ও ধর্মীয় শি¶কদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি
২৭.যানজট নিরসন ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ২৮.ধর্মীয় রাজনৈতিক সম্প্রীতি
গড়ে তোলা ও বিবিধ।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

মুক্তি পাচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া

নূর নিউজ

দেশে ফিরলেন ইউক্রেনে আটকেপড়া ২৮ নাবিক

নূর নিউজ

এলপিজি সিলিন্ডার গ্যাসের মূল্য আরেক দফা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চরম অমানবিক

নূর নিউজ