বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে যে শর্তে সাজা মওকুফ করে কারামুক্তি দেওয়া হয়েছিল, তাতে তার রাজনীতি করার ব্যাপারে কোনো শর্ত নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দীর্ঘ ২৫ মাস কারাভোগের পর সরকারের নির্বাহী আদেশে ছয় মাসের জন্য সাজা মওকুফ হয়ে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ মুক্তি পান তিনি। বাসায় অবস্থান ও চিকিৎসা নিতে হবে দেশেই- এমন শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। সাজা মওকুফকালীন তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
এখন খালেদা জিয়ার রাজনীতি করা না করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমন প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিউট অব ইন্ট্যারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, নির্বাহী আদেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তির ক্ষেত্রে রাজনীতি করা নিয়ে কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি। তবে তার শারীরিক অবস্থা রাজনীতি করার মতো নয়।
মন্ত্রী বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) ঢাকাস্থ নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন, দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। এর বাইরে কোনো শর্ত নাই। আপনারা প্রশ্ন করেছেন- উনি রাজনীতি করতে পারবেন কিনা। আমি সত্য বলি বলেই বলেছি, রাজনীতি করার ব্যাপারে কোনো শর্ত নাই।’
এদিকে খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে গত সোমবার বিকালে অমর একুশে বইমেলায় ছাত্রলীগের স্টল পরিদর্শনে গিয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড আছে। এই অবস্থানটা তার নির্বাচন করার পক্ষে নয়। তিনি নির্বাচন করার জন্য যোগ্য না।’
খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিনি বিএনপির নেতা হিসেবে যদি রাজনীতি করতে চান, সেক্ষেত্রে যে শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, সেটি মেনে তাকে করতে হবে। নো ওয়ে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের এমন বক্তব্যের বিষয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আনিসুল হক বলেন, ‘উনি নির্বাচন করতে পারবেন না কারণ উনি দণ্ডিত। রাজনীতি করতে পারবে না এমন কথা কোথাও নাই।’
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৫ মার্চ কারামুক্তির পর গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের বাসভবন ফিরোজায় থাকছেন খালেদা জিয়া। ওই সময় যে ৬ মাসের জন্য সাজা মওকুফ করা হয়েছিল, সেই মেয়াদ শেষে কয়েক দফায় বৃদ্ধি করা হয়। সর্বশেষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠবারের মতো আরও ছয় মাসের জন্য সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ায় সরকার, যার মেয়াদ আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত।