গাজায় খাবার ও পানির তীব্র সঙ্কট, চারদিকে হাহাকার

এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইসরাইলের নির্বিচার বোমা হামলায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায়। এদিকে জল, স্থল ও আকাশপথে গাজায় হামলার জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছেন ইসরাইলি সেনারা। সরকারি নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।

অন্যদিকে দিনরাত বোমাবর্ষণ চলছে। ঘর থেকে বের হলেই মৃত্যুর শঙ্কা। এর মধ্যে নির্দেশ এসেছে— বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ার।‘নিরাপদ আশ্রয়ের’ খোঁজে দিগ্বিদিক ছুটছেন লাখ লাখ মানুষ। খাবার, পানি ও ওষুধের তীব্র সংকট চলছে। রোববার পর্যন্ত এটাই ছিল গাজার পরিস্থিতি।

গাজার বাসিন্দাদের কাছে খাবার, পানি ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।

তারা বলছে, এ মুহূর্তে গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে না পারলে খাবার, পানি ও চিকিৎসার অভাবে শত শত মানুষের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব নয়।

গাজার উত্তরাঞ্চলে হামলা চালানোর জন্য এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের উপত্যকার দক্ষিণ অংশে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল। এর পর থেকে উত্তর গাজার ১১ লাখের বেশি বাসিন্দা বাড়িঘর ছেড়ে দক্ষিণ দিকে যাচ্ছে। তবে অনেকেই আহত হয়ে হাসপাতালে থাকায় সেখানেই থাকতে হচ্ছে।

গাজার বাসিন্দাদের জন্য সবচেয়ে বড় সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে খাবার। মুদিদোকানগুলো বেশিরভাগ বন্ধ। যে দুই-একটি দোকান খোলা রয়েছে, সেখানেও মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে খাবার না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। এসব মানুষের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে।

ইসরাইল পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার পর গাজায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, গাজার বাসিন্দাদের জন্য সুপেয় পানি এখন জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাজার ২০ লাখ মানুষের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ করতে হলে গাজায় জ্বালানি প্রয়োজন। এক সপ্তাহ ধরে গাজায় কোনো ত্রাণসহায়তা ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, পানি শোধনাগার ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা অচল হওয়ার পর থেকে গাজার বাসিন্দারা সুপেয় পানির তীব্র সংকটে পড়েছেন। কুয়া থেকে দূষিত পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। এতে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।

ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় নিহত এবং গুরুতর জখম ও আহত ব্যক্তিদের চাপে গাজার হাসপাতালগুলোয় তিল ধারণের জায়গা নেই। তবে বেশিরভাগ রোগীকে সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। এদিকে ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী না আসায় হাসপাতালগুলোয় স্বাস্থ্যসেবাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি। ৩ হাজার ৪০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলের বোমা হামলায় ৭২৪ শিশুসহ অন্তত ২ হাজার ৩২৯ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আনুমানিক ৯ হাজার ৭০০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রায় ৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আলোচনা করতে তুরস্কে পৌঁছেছেন রুশ ও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নূর নিউজ

জঙ্গিবাদে অর্থায়নের অভিযোগে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশির কারাদণ্ড

নূর নিউজ

বিশ্বখ্যাত ভারোত্তলক রেবেকার ইসলাম গ্রহণ

আনসারুল হক