চুরি ও ছিনতাইয়ের শাস্তি প্রসঙ্গে ইসলাম যা বলে

ইসলাম ন্যায়বিচার ও সামাজিক নিরাপত্তার উপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। চুরি ও ছিনতাই সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং মানুষের জান-মালের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে। তাই ইসলাম চুরি ও ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রেখেছে।

কোরআনের দৃষ্টিকোণ

আল্লাহ বলেন, ‘চোর, পুরুষ হোক কিংবা নারী, তাদের হাত কেটে দাও তাদের কৃতকর্মের প্রতিদানস্বরূপ, যা আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি। আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা আল-মায়িদা: ৩৮)
তবে, ইসলামে শাস্তি কার্যকরের জন্য নির্দিষ্ট শর্ত রয়েছে। যেমন, চুরি করতে হবে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের অধিক এবং এটি প্রকাশ্য অপরাধ হতে হবে। এছাড়া, কোনো ব্যক্তি যদি অনাহারে চুরি করে, তবে করুণা ও সহানুভূতির ভিত্তিতে শাস্তির পরিবর্তে তার দারিদ্র্য দূর করার ব্যবস্থা করা হয়।

হাদিসের দৃষ্টিকোণ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘আল্লাহর শপথ! যদি আমার মেয়ে ফাতিমাও চুরি করত, তবে আমি তার হাত কেটে দিতাম।’
(সহিহ বুখারি: ৬৭৮৮, সহিহ মুসলিম: ১৬৮৮)

এটি প্রমাণ করে যে, ইসলামে আইন সকলের জন্য সমান, কারও প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হয় না।

ছিনতাইয়ের শাস্তি

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি মানুষের সম্পদ অন্যায়ভাবে (ছিনতাই বা ডাকাতির মাধ্যমে) গ্রহণ করে, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (আবু দাউদ: ২৭৬৩)

ছিনতাই বা ডাকাতি আরও গুরুতর অপরাধ, কারণ এটি সরাসরি জনগণের নিরাপত্তাকে ব্যাহত করে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দেশে অশান্তি সৃষ্টি করতে তৎপর হয়, তাদের শাস্তি হলো হত্যা করা, অথবা শূলিতে চড়ানো, অথবা তাদের হাত-পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলা, অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা।’ (সূরা আল-মায়িদা: ৩৩)

উপসংহার

ইসলাম অপরাধ দমনে কঠোর, কিন্তু একই সঙ্গে ন্যায়বিচার ও দয়া প্রদর্শনে উদার। প্রকৃত ইসলামী শাসনব্যবস্থায় সমাজের মানুষ যেন চুরি বা ছিনতাই করতে বাধ্য না হয়, সে জন্য দারিদ্র্য বিমোচনের ব্যবস্থা নেওয়ার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের উচিৎ নৈতিক মূল্যবোধ বজায় রাখা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

প্রিয়নবী সা. যেভাবে দোয়া করতে পছন্দ করতেন

নূর নিউজ

হজের খুতবা অনুবাদ হবে বাংলাসহ আরও ১৪ ভাষায়

নূর নিউজ

ইফতারের আগে যেসব আমল করতেন মহানবী সা.

নূর নিউজ