২০২০ সালের ১৫ই নভেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসায় কাউন্সিলের মাধ্যমে পুনর্গঠিত হয়েছিল হেফাজতের কমিটি। তবে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতার জেরে সেই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছিল। মাওলানা মামুনুল হক, সাখাওয়াত রাজী , জুনায়েদ আলহাবিব, খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবি, আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মুফতি হারুন ইজহারসহ সেই কমিটির প্রভাবশালী নেতাদের অনেকেই কারাগারে গিয়েছিলেন। এখন সেই বিলুপ্ত কমিটির সবাইকে বর্তমান কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শনিবার রাজধানীর খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদরাসায় অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
হেফাজত আমীর আল্লামা মহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় আগের কমিটির সকল সদস্যকে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটিতে যথাযথ মূল্যায়নের জন্য ১২ সদস্য বিশিষ্ট একটি সাব-কমিটিও গঠন করা হয়। মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমানকে সেই সাব-কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। এছাড়া সভায় সদ্য প্রয়াত সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়ার শূন্য পদে দুই জনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তাঁরা হলেন- হাটহাজারী মাদরাসার বর্তমান মহাপরিচালক আল্লামা মুফতি খলিল আহমদ কাসেমী এবং ঢাকার কামরাঙ্গীরচর মাদ্রাসার আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী।
কেন্দ্রীয় কমিটির এই বৈঠকে হেফাজত নেতারা বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইটে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী হাফেজ রেজাউল করীম নিহতের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আর এখনও পর্যন্ত এই হত্যায় জড়িত আসামিরা আটক না হওয়ায় সরকারের চরম ব্যর্থতা বলে অভিহিত করেন। একইসাথে অনতিবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান।
বৈঠকে হেফাজত নেতৃবৃন্দ মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দি সকল উলামায়ে কেরামের দ্রুত মুক্তি এবং ২০১৩ সালে থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের বারবার আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও সকলের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার না হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
একইসাথে সকল নেতাকর্মীর মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
সভায় অন্যদের মধ্যে নায়েবে আমির আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মুফতি জসিম উদ্দীন, মাওলানা আইয়ূব বাবুনগরী, মাওলানা আব্দুল আউয়াল সাহেব ডিআইটি, মুফতি মোবারক উল্লাহ জামিয়া ইউনুছিয়া, মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা জহুরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল কাউয়ূম সোবহানী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদ্রীস, অর্থ সম্পাদক মুফতী মুহাম্মাদ আলী কাসেমী, সহ অর্থ সম্পাদক মাওলানা হাবীবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সংগঠনের নতুন সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে সেই বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সদ্য কারামুক্ত নেতা মাওলানা আজিজুল ইসলামাবাদী মানবজমিনকে বলেন, এই সিদ্ধান্তকে আমরা খুব ইতিবাচকই দেখছি। এর মধ্যদিয়ে হেফাজতে ইসলাম আগের সেই জৌলশপূর্ণ যৌবনে ফিরে যাবে। দেশের তৌহিদী জনতা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় হেফাজতকে যেভাবে দেখতে চায়,নতুন এই নেতৃত্ব ঠিক সেভাবেই কাজ কর
বে।