ফজর নামাজ পড়া সহজ হবে যেভাবে

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করে তার জৈবিক চাহিদা পূরণ করার অনেকগুলো মাধ্যম দিয়েছেন। এসবের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো ঘুম। ঘুম মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য অনন্য এক নেয়ামত।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তিনিই নিজ রহমতে তোমাদের জন্য রাত-দিন বানিয়েছেন, যাতে তোমরা তাতে বিশ্রাম নিতে পার ও আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার।’ (সূরা কাসাস, আয়াত, ৭৩)।

অপর এক আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমাদের ঘুমকে ক্লান্তি ঘুচানোর উপায় বানিয়েছি এবং রাতকে বানিয়েছি আবরণস্বরূপ।’ (সূরা নাবা, আয়াত, ৯-১০)।

এই আয়াতগুলো থেকে বোঝা যায়, আল্লাহ তায়ালা মানুষের সারা দিনের কর্মব্যস্ততার ক্লান্তি ও বিষণ্ণতা দূর করার জন্য অনন্য এক নেয়ামত দান করেছেন, আর তাহলো, ঘুম।

এ অনন্য নেয়ামত ঘুম দিয়েই আল্লাহ তায়ালা ক্ষ্যান্ত হননি; বরং ঘুম নামক এ নেয়ামত ভোগ করার জন্য রাতকে নির্বাচন করেছেন। কারণ, মানুষের আরামদায়ক ঘুম তখনই আসে, যখন তার চারপাশ সুনসান নীরবতা বিরাজ করে এবং কোনো ধরনের হট্টগোল ও হৈচৈ না থাকে। যে কারণে অধিক রাত না জেগে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশার নামাজ এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ দেরি করে পড়া পছন্দ করতেন। আর এশার আগে ঘুমানো এবং এশার পর না ঘুমিয়ে গল্পগুজব করা অপছন্দ করতেন। (বুখারি, হাদিস, ৫৯৯)।

এসব কিছু সামনে রেখে একজন মানুষ যখন ঘুমাতে যায়, তখন মানবজাতির ঘোষিত প্রকাশ্য চিরশত্রু শয়তান মানুষের কাছে চলে আসে। তার ঘাড়ে তিনটি গিঁট দেয়।

হাদিসে বর্ণিত আছে, মানুষ যখন ঘুমাতে যায়, তখন শয়তান তার ঘাড়ে তিনটি গিঁট দেয়; প্রতিটি গিঁট দেয়ার সময় বলে, এখনও দীর্ঘ রাত আছে, তুমি আরও ঘুমাও। এরপর যখন সে ব্যক্তিটি ঘুম থেকে জাগ্রত হয় এবং আল্লাহকে স্মরণ করে (অর্থাৎ ঘুমের দোয়া পড়ে), তখন শয়তানের প্রথম গিঁট খুলে যায়। এরপর যখন সে অজু করে, তখন শয়তানের দ্বিতীয় গিঁট খুলে যায়। অতঃপর যখন সে ফজরের নামাজ আদায় করে, তখন শয়তানের তৃতীয় গিঁট খুলে যায়। ফলে সে ব্যক্তি আনন্দ চিত্তে প্রফুল্ল মনে উদ্যমের সঙ্গে সকাল যাপন করে। আর যে ব্যক্তি শয়তানের দেয়া তিনটি গিঁট খোলে না (অর্থাৎ উক্ত তিনটি আমল করে না), সে বিষণ্ণ মনে অলসভাবে মন্দ মন নিয়ে সকাল যাপন করে। (বুখারি, হাদিস, ১১৩১)

অতএব, এ কথা স্পষ্ট, যে ব্যক্তি হাদিসে বর্ণিত তিনটি আমল করে শয়তানের গিঁট খোলে, এর প্রভাব তার সারাদিনের কাজ-কর্ম ও আমল-আখলাকসহ সব ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হয়। আর তাই তার সব কাজ উদ্যমতার সঙ্গে তৃপ্তিসহ ত্রুটি-মুক্তভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে। আর হওয়াটাই স্বাভাবিক।

অপরদিকে যে ব্যক্তি (আমলের মাধ্যমে) ওই গিঁট খোলে না, এভাবেই তার দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়, এক সময় এসব গিঁট মিলেমিশে মহাগিঁটে পরিণত হয়, তখন তার কাজ-কর্মে, আমলে-আখলাকে কুফলের প্রভাব প্রতিফলিত হয়। তখন তার কোনো কাজই সুচারুরূপে তৃপ্তিসহ ত্রুটিমুক্ত আদায় হয় না। আর না হওয়াটাই স্বাভাবিক।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

নামাজে ভুল হয়েছে কি না- এমন সন্দেহের পর সাহু সিজদা দিলে করণীয়

নূর নিউজ

ড. আলী আল সালুসের ইন্তেকালে আল নূর কালচারাল সেন্টারের গভীর শোক

নূর নিউজ

ঘুমের আগে বিছানা পরিষ্কার নিয়ে যা বলেছেন প্রিয়নবী সা.

নূর নিউজ