বিএনপির সভা-সমাবেশ ঠেকাতেই সরকারের বিধিনিষেধ : রিজভী

শুধু বিএনপির সভা-সমাবেশ ঠেকাতেই সরকারের বিধিনিষেধ কি না এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘শুধু বিএনপির সভা-সমাবেশ ঠেকাতেই এই বিধিনিষেধ কি না তা নিয়ে জনগণের প্রশ্ন রয়েছে। কারণ সরকারের বিরুদ্ধে মানুষ জেগে উঠেছে। ১৪৪ ধারা ভেঙে সভা-সমাবেশে যোগ দিতে শুরু করেছে মানুষ। এতেই আতঙ্কিত সরকার। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, যতই চক্রান্তের জাল ফেলা হোক না কেন, এই অবৈধ সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না। মামলা দিয়ে, সাজা দিয়ে, বিধিনিষেধ দিয়ে, চক্রান্ত করে জনগণকে আর দাবিয়ে রাখা যাবে না।’

করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করে গতকাল প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

সরকারের বিধিনিষেধের মধ্যে বিএনপির জেলা পর্যায়ের ঘোষিত দ্বিতীয় দফায় কর্মসূচি চলবে কি না জানতে চাইলে রিজভী বলেন, ‘আমাদের যে কর্মসূচি ইতোমধ্যে ঘোষিত হয়েছে, সেই কর্মসূচি এখনও চলমান আছে। এটা চলমান থাকবে। এখন পর্যন্ত আমার কাছে যে সংবাদ আছে, তাতে আমাদের এই সিদ্ধান্তই রয়েছে।’

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাঁকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে বিএনপির উদ্যোগে সারাদেশে ৪০ জেলায় সমাবেশের কর্মসূচি শুরু হয়েছে গত ৮ জানুয়ারি থেকে; যা চলবে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত।

করোনা সংক্রমণ আবারও বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য সরকারকেই দায়ী করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে ৩০ শতাংশ। করোনা শুরু হয়েছে প্রায় দুই বছর। যদি শুরুতেই উদ্যোগ নিত সরকার তাহলে প্রায় শতভাগ করোনা টিকা দেওয়া সম্ভব হতো। দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশেই ৬০ শতাংশের ওপরে টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত টিকা আর করোনাসামগ্রী নিয়ে সরকার কেলেঙ্কারি ছাড়া আর কিছুই উপহার দিতে পারেনি। তারা যদি সঠিক ব্যবস্থা নিত, যদি ৬০-৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পারত, তাহলে করোনা মহামারী বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো সুযোগ থাকতো না।

রাজধানীর ভাষানটেক থানায় দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় দলের ১০ নেতাকর্মীকে সাজা দেওয়ার ঘটনা তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নতুন আরেকটি মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে শুরু করেছে সরকার। ইতোমধ্যে দলের যেসব নেতাকর্মীর নামে হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলা দেওয়া হয়েছিল, এখন সেই মামলাগুলোতে ধারাবাহিক সাজা দেওয়া শুরু করেছে। অবৈধপথে ক্ষমতায় থাকা এবং ভোটারবিহীনভাবে আগামী নির্বাচন নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত করতেই একের পর এক সাজা দেওয়া হচ্ছে। আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে নির্দোষ বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দেওয়া রাষ্ট্রের নাৎসীবাদী চেহরা বিপজ্জনকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবিকে গতকাল রাতে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তারের ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অভিহিত করে অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি জানান রিজভী।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা বিলকিস জাহান শিরিন, আবদুস সালাম আজাদ, বেলাল আহমেদ, আকরামুল হাসান, কৃষক দলের ইশতিয়াক আহমেদ নাসির, যুবদলের আবদুল মুনায়েম মুন্না, কামরুজ্জামান দুলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহিদুল কবির প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

 

এ জাতীয় আরো সংবাদ

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন আটক, এখনো কারণ জানায়নি পুলিশ

নূর নিউজ

দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন জামায়াত আমির

নূর নিউজ

‘শিক্ষাব্যবস্থা ও কুর‌আন সুন্নাহ বিরোধী আইনের প্রশ্নে কোনো আপোষ চলবে না’

নূর নিউজ