বিয়েতে মোহরে ফাতেমি কি দিতেই হয়?

কোনো নারীকে বিয়ে করলে ইসলামি বিধান অনুযায়ী তাকে দেন মোহর দিতে হয়। ইসলামি বিধান অনুযায়ী দেনমোহর দেওয়া ওয়াজিব। মোহর ধার্য করা শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, স্ত্রীর অধিকার। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আর মুমিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের আগে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারীদেরকে তোমাদের জন্য বৈধ করা হল, যদি তোমরা তাদের মোহর প্রদান কর বিয়ের জন্য, প্রকাশ্য ব্যভিচার বা গোপন প্রণয়িনী গ্রহণকারী হিসেবে নয়। (সুরা মায়েদা, আয়াত, ৫)

দেনমোহর নারীর ন্যায্য অধিকার সে যেন তা সঠিকভাবে পায় এবং নারীর যেন অবমূল্যায়ন না হয় তার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। মোহরের শরয়ি বিধান হলো, ১০ দিরহামের কম না হওয়া (১০ দিরহামের পরিমাণ বর্তমান হিসাবে পৌনে তিন ভরি খাঁটি রুপা)। পৌনে তিন ভরি খাঁটি রুপার মূল্য যখন যা, মহরের সর্বনিম্ন মূল্যও তখন তা।

মুসলিম সমাজে বিয়ের ক্ষেত্রে মোহরে ফাতেমিকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। অনেক নারী মোহরে ফাতেমি পাওয়ার আকাঙ্খাও করে থাকেন। মোহরে ফাতেমি বলা হয়, নবী (সা.) নিজ কন্যা হজরত ফাতিমা (রা.)-কে হযরত আলী (রা.) এর সঙ্গে বিবাহ দেওয়ার সময় যে মোহর নির্ধারণ করেছিলেন, তাকেই মোহরে ফাতেমি বলে।

তবে বিয়ের সময় মোহরে ফাতেমি দেওয়া আবশ্যক নয়। মোহরে ফাতেমি নির্ধারণ করা সু্ন্নত। কোনো স্বামীর যদি মোহরে ফাতেমি নির্ধারণের মতো আর্থিক অবস্থা না থাকে তাহলে তার আর্থিক অবস্থা ও সামর্থের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। স্বামীর সামর্থ্যের বাইরে মোহর ধার্য করে তাকে আল্লাহর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘বিত্তবান নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যয় করবে এবং যার জীবন-জীবিকা সীমিত, সে আল্লাহ যা দান করেছেন তা থেকে ব্যয় করবে…।’ (সূরা তালাক, আয়াত, ৭)

মূলত যেই পুরুষের মোহরে ফাতেমি পরিমাণ মোহর দেয়ার সামার্থ্য রয়েছে তার জন্য মোহরে ফাতেমি পরিশোধ করা সুন্নত। যাদের মোহরে ফাতেমি দেয়ার সক্ষমতা নেই তারা তাদের নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী মোহর পরিশোধ করবে।

হাদিস শরিফে এসেছে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সর্বোত্তম মোহরানা হচ্ছে- সহজসাধ্য মোহরানা’। (বাইহাকি, হাদিস, ১৪৭২১)

এক হাদিসে আম্মাজান আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কনের বরকতের আলামত হচ্ছে, বিয়ের প্রস্তাবনা সহজ হওয়া, মোহরানা সহজসাধ্য হওয়া এবং গর্ভ ধারণ সহজ হওয়া।’ (সহিহুল জামে, হাদিস, ২২৩৫, মুসনাদে আহমাদ, হাদিস, ২৩৯৫৭)

ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘সাবধান, তোমরা নারীদের মোহরানা নিয়ে বাড়াবাড়ি করবে না। যদি মোহরানা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা দুনিয়াতে সম্মানের বিষয় হত কিংবা আল্লাহর কাছে তাকওয়া হত তাহলে তোমাদের নবী তা করতেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস, ১১১৪)

এ জাতীয় আরো সংবাদ

হজযাত্রীরা মক্কায় গিয়ে প্রথমে যা করবেন

নূর নিউজ

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সিন্ডিকেট নিয়ে যা বললেন বায়তুল মোকাররমের খতিব

নূর নিউজ

কোরবানির গোস্ত যেভাবে বন্টন করবেন

নূর নিউজ