মহানবী (সা.)-এর অবমাননাকারীদের বিচার না করলে ভারত ভেঙ্গে খন্ড খন্ড হয়ে যাবে: ইসলামী ঐক্যজোট

ভারতে মহানবী (সা.) ও হযরত আয়েশা (রা.)-এর অবমাননার প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী ঐক্যজোট। আজ বৃহস্পতিবার বাদ যোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী বলেন, ভারতের ক্ষমতাসীন দলের নেতা নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দাল হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও তার প্রিয়তমা স্ত্রী হজরত আয়েশা (রা.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করে বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত দিয়েছে। আরব বিশ্বসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশ যখন এর প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে। তখন ৯২ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত বাংলাদেশে সরকারের নিরবতা আমাদেরকে হতাশ করেছে। বর্তমান সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি- আপনারা অবিলম্বে সরকারীভাবে এর প্রতিবাদ করুন এবং চলমান জাতীয় সংসদে ভারতের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করুন।
তিনি দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশে প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা নিজ নিজ দলকে ক্ষমতায় বসাতে রাজপথে প্রাণ বিসর্জন দিতে পারে। কিন্তু রাসূল (সা.)-এর অপমানে তাদের প্রতিবাদ আমাদের চোখে পড়ে না। আমি স্পষ্ট বলছি, আগামীতে কেউ যদি ক্ষমতায় থাকতে চায় বা ক্ষমতায় আসতে চায় তাদেরকে নবী করীম (সা.)-এর এই অবমাননার প্রতিবাদ করতেই হবে, অন্যথায় বাংলাদেশের ৯২ ভাগ মুসলমান তাদের বয়কট করবে।
তিনি আরও বলেন, রাসূল (সা.)-এর অবমাননা সর্বকালে ও সবদিক থেকে জঘণ্য অপরাধ। অতীতে যারাই প্রিয় নবীজী (সা.)-এর অবমাননা করেছে, তারা ইতিহাসে আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। ভারতের বিজেপি সরকার যদি এই ঘটনায় দোষী দু’নেতার উপযুক্ত বিচার না করে, তাহলে ভারত ভেঙ্গে খন্ড খন্ড হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।
সমাবেশ ইসলামী ঐক্যজোট মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ বলেন, ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার রাসূল (সা.)-এর অবমাননাকারী দুই নেতার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে একটি হাস্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আমরা মনে করি, এটি সুস্পষ্ট প্রহসন এবং পরিস্থিতি সামলাতে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার একটি নির্লজ্জ প্রচেষ্টা। এসব অপচেষ্টা করে তারা ভারতকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার বাদ যোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে প্রতিবাদ সমাবেশ
তিনি বলেন, ভারতকে শান্তি বজায় রাখতে হলে অবশ্যই অসভ্য নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দালের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শুধু তাই নয়, অবিলম্বে এই ঘটনার জন্য ভারতকে প্রকাশ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ধর্ম অবমাননা রোধে ভারতের সংসদে আইন পাশ করতে হবে। এই আইনেই রাসূলের অবমাননাকারী দু’নেতাকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একই সঙ্গে ভারত জুড়ে ইসলামের বিরুদ্ধে যে অপচর্চা ও মুসলমানদের উপর নিপীড়ন চলছে তা বন্ধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভারতকে মনে রাখতে হবে, ভারতে সভ্যতার যত ইতিহাস সব ইতিহাস মুসলমানদের। কুতুব মিনার, দিল্লির লাল কেল্লা, শাহী মসজিদ ও তাজমহল মুসলমানদের। ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে চাইলে এইসব কিছু মুসলমানদের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। আর ভারতকে রক্ষা করতে হলে ইসলামের সাথে সমন্বয় করে ও মুসলমানদের সাথে সমঝোতা করে চলতে হবে। অন্যথায় দেশে দেশে যেভাবে ভারতবিরোধী আন্দোলনের দাবানল জ¦লে ওঠেছে। তাতে ভারত সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বয়কটের মুখোমুখি হয়ে দেওলিয়া হয়ে যাবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম মহাসচিব মুফতী তৈয়্যব হোসাইন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আবুল কাশেম, যুগ্ম মহাসচিব মুফতী আব্দুল কাইয়্যূম, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আলতাফ হোসাইন, আইন বিষয়ক সম্পাদক মুফতী মীর হেদায়াতুল্লাহ গাজী, কেন্দ্রীয় নেতা মুফতী আবুল খায়ের বিক্রমপুরী, মাওলানা নুরুজ্জামান, মাওলানা খোরশেদ আলম, মাওলানা কাজী আজিজুল হক, মাওলানা রিয়াজতুল্লাহ, মাওলানা আনসারুল হক ইমরানসহ আরো অনেকে।
সমাবেশ শেষে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পূরণায় বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে এসে দু’আর মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

হজ পালন করে প্রথম ফ্লাইটে ঢাকায় আসলেন ২ হাজার ৫৮২ জন হাজি

নূর নিউজ

মুসলিম-অমুসলিম কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি জুলুম সহ্য করা হবে না: মাওলানা আরশাদ মাদানি

নূর নিউজ

জ্বরে আক্রান্ত খালেদা জিয়া

নূর নিউজ