গাজায় স্থল অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্বের সূচনা করেছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, মাটির ওপরে ও নিচ থেকে শত্রুদের নিশ্চিহ্ন করাই এই অভিযানের লক্ষ্য।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় শুক্রবার রাতে ব্যাপক পরিসরে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযান গতকাল শনিবারও অব্যাহত ছিল। গাজার উত্তরাঞ্চলে ঢুকে পড়া দেশটির সেনাদের বিরুদ্ধে যোদ্ধারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাস শাসিত গাজায় চলছে ইসরায়েলি বিমান হামলা। অব্যাহত বোমাবর্ষণে গাজার অবরুদ্ধ জনগণের সঙ্গে বাইরের বিশ্বের যোগাযোগ প্রায় বন্ধ। হামাসের সামরিক নেতারা বলেছেন, ইসরায়েলের স্থল অভিযানের কারণে দীর্ঘ যুদ্ধের সূচনার আশঙ্কা করছেন তারা।
গত শনিবার তেল আবিবে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতায় নেতানিয়াহু গাজায় দীর্ঘ ও কঠোর সামরিক অভিযানের কথা জানিয়েছেন। তবে তিনি ইসরায়েলের বর্তমান স্থল অভিযানকে পূর্ণ মাত্রার আগ্রাসন হিসেবে আখ্যায়িত করেননি। তিনি আবারও ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের গাজা উপত্যকার উত্তরাংশ থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানান। উত্তরাংশেই বর্তমানে আক্রমণ চালাচ্ছে ইসরায়েলই বাহিনী। হামাসের হাতে জিম্মি দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টার কথাও এ সময় বলেন নেতানিয়াহু।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এটা যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায়। এর লক্ষ্যও পরিষ্কার আর সেটা হচ্ছে হামাসের শাসন ও সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করা এবং জিম্মিদের ঘরে ফিরিয়ে আনা। আমরা কেবল শুরু করেছি। মাটির ওপরে এবং নিচে সব জায়গা থেকে শত্রুদের ধ্বংস করা হবে।’
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত সাড়ে ৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আছে ৩ হাজারেরও বেশি শিশু। গত শনিবার এই ধ্বংসযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছেন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা সত্ত্বেও ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী বিপুল পরিমাণ গোলাবর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। কেড়ে নিচ্ছে হাজার হাজার নিরীহ মানুষের প্রাণ। হাসপাতালে বোমা হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ ও এবং হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যুর পরও পুরো বিশ্ব কীভাবে নীরব থাকতে পারে!’
আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই গাজায় বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ভয়াবহ এই হামলায় ক্রমাগত বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যানুসারে গাজা ও পশ্চিম তীরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৭০০। আহত হয়েছে আরও প্রায় সাড়ে ২১ হাজার।