রমজানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিরোধ ও বন্দি আলেমদেরকে মুক্তির আহবান হেফাজত আমীরের

ঈমান-আক্বিদাভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, সামাজিকভাবে রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় উৎসাহ ব্যঞ্জক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ এবং রমজানে ঘন ঘন ইফতার ও দোয়া মাহফিল আয়োজনের জন্য হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও আলেম সমাজের প্রতি আমি আহ্বান জানাচ্ছি। এতে একদিকে রোজাদারদের প্রতি মানবিক সহযোগিতা হবে, অন্যদিকে সকল শ্রেণী-পেশার মুসলমানদের সাথে আলেমদের বন্ধন আরো দৃঢ় হবে। একই সাথে তিনি বেহায়াপনা, নগ্নপনা ও বিজাতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিরোধসহ সকল প্রকার অনৈসলামিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে জনমত গঠন ও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

আজ (২২ মার্চ) বুধবা এক বিবৃতিতে হেফাজত আমীর এসব কথা বলেন। তিনি রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন, এমনিতেই গত এক বছর যাবত লাফিয়ে লাফিয়ে সকল পণ্যের দাম বেড়েছে।

এখন রমজানকে সামনে রেখে আবার বাড়তে শুরু করেছে। মাছ গোশতের যে অগ্নি মূল্য, তা কেনার সাধ্য দেশের বেশিরভাগ মানুষের নাই। ডিম ও ব্রয়লার মুরগীর দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে রোজাদারদের জন্য সাহরি-ইফতারির খাবার যোগাড় করা অনেক কষ্টকর হয়ে যাবে। তাই সররকার ও ব্যবসায়ী সমাজের প্রতির উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি, মানুষের কষ্টের কথা ভাবুন, দয়াদ্র ও মানবিক হোন এবং সাধারণ মানুষকে শোষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন। অতিমুনাফা চিন্তা থেকে যদি কেউ কারসাজি করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের দুর্দশা বাড়ায়, সেই ব্যবসা হারাম হবে, বরকত ওঠে যাবে এবং পরকালে জাহান্নামের কঠিন আযাব ডেকে আনবে। আর যারাই অন্যায়ভাবে জনগণের উপর জুলুম চালাবেন, আল্লাহর পাকড়াও থেকে কেউ রেহাই পাবেন না। জনগণের উপর জুলুম করলে তার পরিণতি কখনো কল্যাণ বয়ে আনবে না।

বিবৃতিতে রমজান মাসে দেশের প্রায় সকল কওমী মাদরাসার শিক্ষা বিভাগ ছুটি থাকে উল্লেখ করে হেফাজত আমীর বলেন, পবিত্র রমজানের এই সময়ে তরুণ আলেম ও মাদরাসা ছাত্রদেরকে দাওয়াতী কার্যক্রমের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোকজনসহ সর্বস্তরের মুসলমানদেরকে নিয়ে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে গণসম্পৃক্ততা ও যোগাযোগ আরো বাড়াতে হবে। উলামা-মাশায়েখ ও দ্বীনদার বিত্তশালীগণ স্থানীয় পর্যায়ে উদ্যোগ নিয়ে গরীব-এতীম, শ্রমিক-মজদুর, ছাত্র, যুবক, ব্যবসায়ীদেরকে নিয়ে এলাকা ভিত্তিক ঘন ঘন ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে সমাজের এসব শ্রেণী-পেশার মুসলমানদেরকে একত্রিত করে তাদের সাথে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরো মজবুত করতে সচেষ্ট হবেন। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের দুঃখ-দুর্দশা, অভাব-অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শুনে সাধ্যমতো সহযোগিতার চেষ্টা করবেন এবং সহমর্মিতা প্রকাশ করে তাদেরকে সাহস যোগাবেন। এর ফলে শুধু মানবিক কাজে ও রোজাদারদেরকে সহযোগিতা করাই হবে না, বরং উলামায়ে কেরাম, ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও তরুণ আলেমদের সাথে দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ও সামাজিক সম্পর্ক আরো মজবুত হবে।

আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, দেশের উলামা মাশায়েখগণ আল্লাহ-রাসূল, কুরআন-হাদীস ও ইসলামের মৌলিক বিধানের মর্যাদা রক্ষায় যেমন সোচ্চার থাকবেন, তেমনি দেশ, সমাজ ও গণমানুষের স্বার্থ নিয়েও কাজ করে যাবেন। মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব, দরিদ্রদূরিকরণ, সেবামূলক কাজ ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে উলামায়ে কেরাম সাধ্যমতো কাজ করে যাবেন। এতে করে দেশের জনগণ আলেমদেরকে ঈমান-আক্বিদার হেফাজতের পাশাপাশি আদর্শ দেশ ও সমাজ গঠনেও যোগ্য প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে সাদরে গ্রহণ করে নিবেন।

তিনি বলেন, মুসলমানদের পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বের বন্ধন এবং ঈমান-আক্বীদা ভিত্তিক ঐক্য অটূট থাকলে, ইসলাম বিদ্বেষী ও দেশের স্বার্থবিরোধীরা দৃশ্যতঃ যত আস্ফালন ও ষড়যন্ত্রই করুক, কখনো আমাদের ক্ষতি ও পরাভূত করতে পারবে না। কারণ, মুসলমানগণ সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের সন্তুষ্টি এবং পরকালীন জীবনের সফলতাকে লক্ষ্য স্থির করেই দুনিয়াবী জীবন পরিচালনা করে থাকেন।

আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী সরকারের প্রতি রমজান শুরু হওয়ার আগেই বন্দি হেফাজতের নেতাকর্মী ও আলেমদেরকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই বন্দি আলেমরা বিনা দোষে কারাগারে অমানবিক কষ্টে আছেন। তাদের পরিবারের সদস্যরা কষ্টকর দিন গুজরান করছেন। নায়েবে নবী আলেমদের প্রতি সদয় হোন, তাদেরকে অন্যায়ভাবে আর কষ্ট দিবেন না। এতে আল্লাহ নারাজ হবেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

নয়াদিল্লিতে বিজেপি সভাপতি ও সেক্রেটারির সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের বৈঠক

নূর নিউজ

ব্যস্ততা ফিরেছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে

নূর নিউজ

তিন মাসে অন্তর্বর্তী সরকার কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে : মির্জা ফখরুল

নূর নিউজ