রাসূল সা.-এর হাস্যোজ্জ্বল চেহারা নিয়ে সাহাবিদের বর্ণনা

বিশিষ্ট সাহাবী আনাস রা. বলেছেন, আমি একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের সাথে কোথাও হেঁটে যাচ্ছিলাম। তখন নাজরানের তৈরি মোটা পাড় বিশিষ্ট একটি সুন্দর চাদর রাসূলের গায়ে ছিল। পথে এক বেদুইনের সাথে সাক্ষাত। লোকটি রাসূলের চাদর ধরে হঠাৎ এত জোরে টানতে লাগল যে, কাঁধের উপরিভাগে চাদরের ভাজের দাগ পড়ে গেল। বুদ্ধু আগন্তুক পীড়াপীড়ি শুরু করল, মুহাম্মদ, তোমার কাছে গনিমতের যে সম্পদ গচ্ছিত আছে তা থেকে আমাকেও ভাগ দাও।

সদা হাস্যোজ্জ্বল, আলোর নবী বেদুইনের প্রকাশ্য অসৌজন্যে সামান্য বিচলিত হলেন না। চেহারায় মুচকি হাসির রেখা আরেকটু প্রসারিত করে দায়িত্বশীল সাহাবিকে নির্দেশ দিলেন, গনিমতের সংরক্ষিত অংশ থেকে আগন্তুককে কিছু দিয়ে দাও। (বুখারি, মুসলিম)।

জগতবাসীর জন্য কল্যাণ এবং রহমতের আধার বানিয়ে যে মহামহিম সত্ত্বাকে দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছে সদাচারের এমন অত্যুজ্জ্বল পরাকাষ্ঠাই প্রদর্শিত হয়েছে তাঁর গোটা জীবন জুড়ে ।

উত্তম আখলাকের পূর্ণতা বিধানের জন্যই তো তিনি প্রেরিত হয়েছেন। আবু হুরায়রা রা. সূত্রে সহিহ বুখারিতে বর্ণিত এ মর্মে রাসূলের এই ‘মধুবাণী’

“انما بعثت لاتمم صالح الأخلاق”

আমাদের সমগ্র সত্ত্বায় পুলক এবং শিহরণ জাগায়।

দয়া, ক্ষমা এবং সদাচারের অনুপম দৃষ্টান্ত প্রত্যক্ষ করে মহাকবি হাসসান বিন সাবিত তার মহাকাব্যে মুক্তোর হরফে যে পঙ্কক্তিমালা গ্রন্থিত করেছিলেন আজ চৌদ্দশত বছর পরেও তা মানব হৃদয়ে সমান অনুরণন সৃষ্টি করে। —

و أحسن منك لم تر قط عيني ~ واجمل منك لم تلد النساء

আপনার চেয়ে সুন্দর কাউকে কোনো চোঁখ কখনো দেখেনি। কোনো নারী আপনার চেয়ে উত্তম গুণের কাউকে জন্ম দিতে পারেনি।

خلقت مبرىًٔ من كل عيب~ كأنما قد خلقت كما تشآء

আপনাকে সৃষ্টি করা হয়েছে যাবতীয় ত্রুটি থেকে মুক্ত করে।
যেন আপনাকে নিজ চাহিদা মেতাবেকই সৃষ্টি করা হয়েছে।

জারির ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেন, ইসলাম গ্রহণের পর আমি যতবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলইহিস সালামের সাথে সাক্ষাত করেছি স্মিত হাসির একটা উজ্জ্বল রেখা সর্বদায় রাসূলের মুখাবয়বে প্রসারিত দেখেছি। (সহিহ বুখারি)

আরেক হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে হারিস রা. বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলইহিস সালাম থেকে অধিকতর হাস্যোজ্জ্বল এবং কান্তিময় কাউকে কখনো দেখিনি। (তিরমিজি)

রাসূলের চরিত্রের প্রশংসা করে আনাস রা. বলেন, আমি দশ বছরাধিক কাল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলইহিস সালামের খেদমত করেছি। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে কখনো তাকে মলিন চেহারায় কথা বলতে দেখিনি। (মুসলিম)

আরেক হাদিসে আনাস রা. বলেন, যখন কেউ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের সাথে সাক্ষাত করতে এসে মোসাফাহা করতেন আগত ব্যক্তি হাত ছাড়ার আগে রাসূল হাত ছাড়িয়ে নিতেন না, আগত ব্যক্তি প্রস্থান করার আগে রাসূল তার থেকে চেহারা ফিরিয়ে নিতেন না। (তিরমিজি)

আয়েশা রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামকে কখনো দু’টি বিষয়ের মধ্যে এখতিয়ার দেওয়া হলে তিনি উম্মতের জন্য তুলনামূলক সহজটি বেছে নিতেন। (বুখারি)

এ জাতীয় আরো সংবাদ

কতটুকু সম্পদে হজ ফরজ হয়

নূর নিউজ

সংবিধানে রাষ্ট্র ইসলাম আছে, ইসলাম থাকবে: পীর সাহেব চরমোনাই

নূর নিউজ

বিনামূল্যে আব্বাসীর মামলা লড়তে চান অ্যাডভোকেট আল মামুন রাসেল

নূর নিউজ