রমজানের শেষ দশকের গুরুত্বপূর্ণ আমল ইতিকাফ। ইতিকাফের বিশেষ ফজিলত হলো এ সময় শবে কদর পাওয়ার বিশেষ সুযোগ থাকে। কারণ, ইতিকাফের সময় মানুষ সব ধরনের জাগতিক কাজকর্ম ছেড়ে আল্লাহর ইবাদতের জন্য মনোনিবেশ করে। এ সময় অন্য সব ব্যস্ততা থেকে নিজেকে বিরত রাখে।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফের মাধ্যমে শবে কদর অনুসন্ধান করতেন।
এ বিষয়ে এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি কদরের রাতের সন্ধানে (রমজানের) প্রথম ১০ দিন ইতিকাফ করলাম। এরপর ইতিকাফ করলাম মধ্যবর্তী ১০ দিন। তারপর আমার প্রতি ওহি নাজিল করে জানানো হলো যে, তা শেষ ১০ দিনে রয়েছে। সুতরাং তোমাদের যে ইতিকাফ পছন্দ করবে, সে যেন ইতিকাফ করে। তারপর মানুষ (সাহাবায়ে কেরাম) তার সঙ্গে ইতেকাফে শরিক হয়।’ (মুসলিম শরীফ)
রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফের বিধান সুন্নতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া। মহল্লার অন্তত অল্প কিছু মানুষ বা একজনের জন্য ইতিকাফ করা আবশ্যক। নারীদের জন্য ইতিকাফ মুস্তাহাব। তারা নিজেরদের বাড়িতে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বানিয়ে সেখানে অবস্থান করবেন এবং সেখানে ইবাদত করবেন।
শেষ দশকের ইতিকাফ শুরু হয় ২০ রমজান সূর্যাস্তের সময় থেকে। অর্থাৎ, ২১ রমজান রাত শুরু হওয়ার আগে মসজিদে প্রবেশ করতে হবে। আর তা শেষ হয় রমজান শেষ হলে। অর্থাৎ ২৯ তারিখে চাঁদ দেখা গেলে বা ৩০ তারিখ পূর্ণ হলে।
সুতরাং যারা রমজানের শেষ দশকে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ, অনুকম্পা, ক্ষমা ও করুণার আশায় মসজিদে ইতিকাফ পালন করেন তারা ২০ রমজান সন্ধ্যার মধ্যে মসজিদে অবস্থান নিয়ে থাকেন।
তবে কেউ যদি চাকরি বা অন্য কোনো ব্যস্ততার কারণে শেষ দশকের শুরুতে ইতিকাফে বসতে না পারেন এবং রমজানের শেষ তিনদিন শুধু ইতিকাফ করেন তাহলে তার ইতিকাফ নফল হিসেবে গণ্য হবে। সেটা আর শেষ দশকের সুন্নত ইতিকাফ হবে না। তিনি নফল ইবাদতের সওয়াব পাবেন এবং রমজানের শেষ দশকের দুইটি বেজোড় রাত পাবেন।
রমজানের সুন্নত ইতিকাফ মূলত শেষ দশকের শুরু থেকেই আদায় করতে হয়। এ বিষয়ে হজরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। (বুখারি, হাদিস : ২০২৫)
হজরত আয়শা রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রমজানের শেষ দশকে মৃত্যু পর্যন্ত ইতিকাফ করেছেন। (বুখারি, হাদিস : ২০২৫)