শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় যা বলেছেন মহানবী (সা.)

সভ্যতার শুরু থেকে জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে সৃষ্টি হয় কর্মক্ষেত্রের। কেউ মালিক হিসেবে, আবার কেউ বা শ্রমিক হিসেবে তৎপর হয়েছে কর্মক্ষেত্রে। শ্রমিক বা মেহনতি মানুষ জীবিকার প্রয়োজনে অন্যের জমিতে, প্রতিষ্ঠানে বা কলকারখানায় শ্রম দিয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শ্রমিকেরা অবহেলিত হয়, শ্রমের মূল্য ঠিকমতো পায় না। তবে শ্রমিক ও মালিকের সম্পর্ক এবং দুই পক্ষের কর্তব্য ও অধিকার ন্যায়নীতি ও সমতার মাপকাঠিতে নির্ধারণ করেছে ইসলাম।

শ্রমিক-মালিক নিছক প্রভু ও ভৃত্যের মতো নয়; বরং এটিকে ভাই ভাই সম্পর্ক বলে অভিহিত করেছেন মহানবী (সা.)। আল্লাহর নবী (সা.) বলেন, ‘যারা তোমাদের কাজ করছে তারা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন।’ (বুখারি শরিফ)

আল্লাহর নবী (সা.) শ্রমিকের অধিকার বিষয়ে অন্য এক হাদিসে উল্লেখ করেছেন, ‘তোমরা যা খাবে, তা থেকে তাদের (শ্রমিককে) খাওয়াবে এবং যা পরিধান করবে, তা তাকে পরিধান করতে দেবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

শ্রমিকদের অধিকার সম্পর্কে ইসলামের নীতি হলো, ‘শ্রমিক নিয়োগ করলে তার মজুরি কত হবে, তা অবশ্যই তাকে জানিয়ে দিতে হবে।’ (হিদায়া)

একই কথা মহানবী (সা.) অন্য এক হাদিসে উল্লেখ করেছেন এভাবে, ‘তোমরা অধীনস্থদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে এবং তাদের কোনো রকমের কষ্ট দেবে না। তোমরা কি জানো না, তাদেরও তোমাদের মতো একটি হৃদয় আছে। ব্যথা দানে তারা দুঃখিত হয় এবং কষ্ট বোধ করে। আরাম ও শান্তি প্রদান করলে সন্তুষ্ট হয়। তোমাদের কী হয়েছে যে তোমরা তাদের প্রতি আন্তরিকতা দেখাও না।’ (বুখারি)

শ্রমিকরাও মানুষ। তাদের শক্তি-সামর্থ্য ও মানবিক অধিকারের প্রতি লক্ষ রাখার বিষয়টি উল্লেখ করতে গিয়ে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মজুরদের সাধ্যের অতীত কোনো কাজ করতে তাদের বাধ্য করবে না। অগত্যা যদি তা করাতে হয়, তবে নিজে সাহায্য করো।’ (বুখারি)

শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত না করার পরিণাম সম্পর্কে মহানবী (সা.) কঠোর বাণী উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমি কঠিন অভিযোগ উপস্থাপন করব—যে ব্যক্তি কাউকেও কিছু দান করার ওয়াদা করে ভঙ্গ করে, কোনো মুক্ত-স্বাধীন ব্যক্তিকে বিক্রয় করে, যে তার মূল্য আদায় করে এবং যে ব্যক্তি অন্যকে নিজের কাজে নিযুক্ত করে পুরোপুরি কাজ আদায় করে নিল, কিন্তু তার মজুরি দিল না, ওরাই সেই তিনজন।’ (মিশকাত)

শ্রমিকদের প্রতি মালিক যাতে সহনশীল থাকে এবং তার ভুলত্রুটি ক্ষমা করে দেয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়ে আল্লাহর নবী (সা.) এক হাদিসে বলেছেন, ‘মজুর-চাকরদের অপরাধ ৭০ বার পর্যন্ত ক্ষমা করে দাও।’ (তিরমিজি)

শ্রমিকের মজুরি যথাসময়ে পরিশোধ করার প্রতি গুরুত্বারোপ করে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মজুরকে তার গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই মজুরি পরিশোধ করে দাও।’ (ইবনে মাজাহ)

এ জাতীয় আরো সংবাদ

রমজানে রোজা রাখার স্বাস্থ্য উপকারিতা

নূর নিউজ

প্রিয়নবী সা.-এর পারিবারিক জীবন যেমন ছিল

নূর নিউজ

হজের ফিরতি ফ্লাইট শুরু আজ

নূর নিউজ