খাবারে লবণ পরিমাণমতো না হলে সেই খাবার বিস্বাদ হয়ে যায়। রান্না যতই ভালো হোক না কেন, লবণের ব্যবহার জানাটা জরুরি। বেশি কিংবা কম হলে সেই খাবার আর মুখে রোচে না কারও। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা খাবারের সঙ্গে বাড়তি লবণ যোগ করে খান। আর এই অভ্যাসেরই বাধ সাধেন চিকিৎসকেরা। এর কারণ কী? বাড়তি লবণ খেলে তা শরীরের বিভিন্ন ক্ষতি ডেকে আনে।
বেশি লবণ মানে বেশি ঝুঁকি
লবণ তৈরি হয় দুটি উপাদান থেকে। সেগুলো হলো সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার মতে, আমরা যে লবণ খাই তাতে সোডিয়ামের পরিমাণ অনেক বেশি, অপরদিকে পটাশিয়াম থাকে খুবই কম। অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ করার ফলে মানুষ উচ্চ রক্তচাপের শিকার হয়। সেখান থেকে বাড়ে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। বাড়তি লবণ খাওয়ার কারণে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতিও দেখা দেয়। এর ফলে বয়সের আগেই হাড় দুর্বল হয়ে যায়।
বেশি লবণ খেলে যেসব বিপদ হতে পারে
বাড়তি লবণ খাওয়ার অভ্যাস যাদের, তাদের এই বিষয়গুলো জানা জরুরি। যারা খাবারের সঙ্গে কাঁচা লবণ খান তারা শরীরের জন্য অনেক সমস্যা ডেকে নিয়ে আসেন। কাঁচা লবণ খাওয়ার ফলে শরীর ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, অতিরিক্ত লবণ খেলে তা পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
দিনে কতটুকু লবণ খাবেন?
বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা বলছে, লবণ খাওয়ার বিষয়ে আমরা বেশিরভাগ মানুষই সচেতন নই। প্রতিদিন ৫ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। সহজ উপায়ে বুঝতে চাইলে মনে রাখবেন, আপনার প্রতিটি খাবারে সামান্য লবণ থাকা উচিত। এর বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
রেডি-টু-ইট খাবার বাদ দিন
বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষই রেডি টু ইট খাবারের দিকে ঝুঁকছেন। প্রতিদিনের ব্যস্ততার কারণে খাবার তৈরির জন্য বাড়তি সময় কেউ খরচ করতে চান না। ফলে অল্প সময়ে তৈরি করা যায় এমন খাবার খান। যে কারণে বাজারে প্যাকেটজাত খাবারের চাহিদা অনেক বেশি। রুটি, পনির, সংরক্ষিত মাংস এবং স্ন্যাকসে ৮০ শতাংশ লবণ পাওয়া যায়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক।
ধীরে ধীরে লবণ খাওয়া কমিয়ে আনুন
আপনার যদি বাড়তি লবণ খাওয়ার অভ্যাস হয়ে যায় তবে তা হুট করে কমাতে যাবেন না। বরং বরং ধীরে ধীরে পরিমাণ কমান। মনে রাখবেন, যত অল্প লবণ খাবেন, ততই শরীরে জন্য ভালো। এখন অসম্ভব মনে হলেও এই অভ্যাস কমাতে আপনার সপ্তাহখানেকের বেশি লাগবে না।