আত্মহত্যা প্রতিরোধে কুরআনের সমাধান

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা” (WHO) এর পরিসংখ্যানগত তথ্য দেখায় যে বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৮ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে মারা যায় এবং প্রতি বছর এক কোটি ৬০ লাখ লোক “আত্মহত্যার চিন্তা” করে, কিন্তু মুসলিম সমাজে এই পরিসংখ্যান একেবারেই আলাদা।

অনুমানগুলি ইঙ্গিত করে যে আত্মহত্যার প্রচেষ্টার সংখ্যা যা মৃত্যুর দিকে পরিচালিত করে না তার সংখ্যার তুলনায় ২০ গুণ বেশি।
আত্মহত্যার ঘটনা মোকাবেলায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর হচ্ছে:
১। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।
২। যাদের আত্মহত্যা করার প্রবণতা রয়েছে তাদের যত্ন নেওয়া এবং তাদের আশা দেওয়ার চেষ্টা করা। এছাড়াও তাদের হতাশা নিরাময় করা ও তাদের সাথে ভালবাসা এবং দয়ার সাথে আচরণ করা।
৩। যারা আত্মহত্যা করার চিন্তা করে, তাদের জন্য কঠোর শাস্তি বিবেচনা করা উচিত।

আত্মহত্যা প্রতিরোধে কুরআনের সমাধান
কুরআনে উল্লেখিত আত্মহত্যা প্রতিরোধের পদক্ষেপ উপরে বর্ণিত পদক্ষেপগুলোর মতোই। এর অর্থ হল সর্বশক্তিমান আল্লাহ আত্মহত্যা সম্পর্কে সতর্ক করেছেন এবং এর জন্য কঠোর চিকিৎসা ও শাস্তির নির্দেশ দিয়েছেন।

সূরা নিসার 29 এবং 30 নং আয়াতে সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলেছেন:
«يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ إِلَّا أَنْ تَكُونَ تِجَارَةً عَنْ تَرَاضٍ مِنْكُمْ ۚ وَلَا تَقْتُلُوا أَنْفُسَكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا * وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ عُدْوَانًا وَظُلْمًا فَسَوْفَ نُصْلِيهِ نَارًا وَكَانَ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرًا

হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের ধন-সম্পদ গ্রাস কর না; তবে (হ্যাঁ) তোমাদের পারস্পরিক সম্মতিতে কারবার হলে (এবং তাতে একে অপরের সম্পদ থাকলে) ভিন্ন কথা এবং তোমরা নিজেদের হত্যা কর না; এবং নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের (অবস্থার) প্রতি পরম করুণাময়। এবং যে কেউ সীমালঙ্ঘন ও অবিচারের ভিত্তিতে এরূপ (আত্মহত্যা) করবে, তাহলে (স্মরণ রাখ যে,) আমরা অতি সত্বর তাকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করব; আর তা আল্লাহর পক্ষে অতি সহজ।

এই দুই আয়াতে আল্লাহ আত্মহত্যা এড়াতে চিকিৎসার তিনটি ধাপ বর্ণনা করেছেন; প্রথমত, যেখানে তিনি বলেছেন: «وَلَا تَقْتُلُوا أَنْفُسَكُمْ» (তোমরা নিজেদের হত্যা কর না)। এভাবে এই আয়াতে আত্মহত্যা সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।
দ্বিতীয়ত, যখন আল্লাহ বলেন: «إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا» নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের (অবস্থার) প্রতি পরম করুণাময়।
এবং এটি এমন ব্যক্তিবর্গের হতাশার মানসিক চিকিৎসা যারা আত্মহত্যার কথা ভাবছে; মহান আল্লাহ: এখানে বলেছেনে যে, তার রহমত তাদের অন্তর্ভুক্তে রয়েছে। এছাড়াও মহান আল্লাহ আরও বলেছেন: «فَسَوْفَ نُصْلِيهِ نَارًا» আমরা অতি সত্বর তাকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করব।

আত্মহত্যার ঘটনাকে কুরআন উপেক্ষা করেনি, বরং এটি সম্পর্কে সতর্ক করেছে এবং এর উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। এর ফলে ইসলামিক দেশগুলিতে আত্মহত্যার প্রবণতার হার অনেক কম, যা এক হাজারে ১টিরও কম।

ডঃ জোস ম্যানুয়েল এবং আলেসান্দ্রা ফ্লিশম্যান, দুই গবেষক, তাদের যৌথ গবেষণার সময় জোর দিয়েছিলেন: ইসলামিক দেশগুলিতে আত্মহত্যার হার (অন্যান্য সমস্ত দেশের বিপরীতে) শূন্যের কাছাকাছি (হাজারে একজনের কম) এবং এর কারণ হল ইসলাম আত্মহত্যা নিষিদ্ধ করেছে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

শবেবরাতে কী করা যাবে, কী করা যাবে না

নূর নিউজ

হজের ফিরতি ফ্লাইট শুরু আজ

নূর নিউজ

শিশুদের যেভাবে রোজায় অভ্যস্ত করবেন

নূর নিউজ