প্রয়োজনের তাগিদেই একজনের সঙ্গে অপরের সম্পর্ক তৈরি হয়। অপরের সঙ্গে হৃদ্যতা তৈরি হয়। মানুষের পরস্পরের এই হৃদ্যতা, সম্পর্ক ও ভালোবাসা যদি একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্য হয় এবং এর মাধ্যমে পরকালের সন্তুষ্টি অর্জন উদ্দেশ্য হয়, তবে এই প্রয়োজনীয় সম্পর্কও মানুষকে পরকালে আল্লাহর কাছ থেকে বিশেষ পুরস্কার অর্জনে সহায়তা করবে।
এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব কোনো বিপদ দূর করে দেবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার কোনো একটি কঠিন বিপদ দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবগ্রস্ত মানুষের অভাব সহজ করে দেবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার অভাব সহজ করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ-ত্রুটি গোপন করে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ততক্ষণ পর্যন্ত সহযোগিতা করেন, যতক্ষণ সে তার অন্য ভাইয়ের সাহায্যে রত থাকে।’ -(মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৯)
আল্লাহর জন্য একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়া ব্যক্তিদের কিয়ামতের দিন বিশেষ পাওনা রয়েছে। এ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, আমার জন্য একে অপরকে মহব্বতকারীরা কোথায়, আজ আমি তাদেরকে আমার ছায়ায় ছায়া দান করব, যখন আমার ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া নেই’। (সহিহ মুসলিম, ৪৫)
খাওলানি রাহিমাহুল্লাহ হজরত মুআয ইবনে জাবাল রা. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বর্ণনা করতে শুনেছি, আল্লাহর জন্য মহব্বতকারীগণ আরশের ছায়ায় নুরের মিম্বারে অবস্থান করবেন, যে দিন তার ছায়া ছাড়া কোন ছায়া থাকবে না’।
তিনি বলেন, আমি (মুআযের কাছ থেকে) বের হয়ে উবাদাহ ইবনে সামেতের সঙ্গে দেখা করি, আমি তাকে মুআয ইবন জাবালের কাছ থেকে শোনা হাদিসের কথা বলি। তা শুনে তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার রবের পক্ষ থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি, ‘আমার জন্য মহব্বতকারীদের আমার মহব্বত করা ওয়াজিব। আমার জন্য খরচকারীদের জন্য আমার মহব্বত ওয়াজিব। আমার জন্য সাক্ষাতকারীদের জন্য আমার মহব্বত ওয়াজিব। আল্লাহর জন্য পরস্পর মহব্বতকারীগণ আরশের ছায়ার নিচে নূরের মিম্বারে অবস্থান করিবে, যে দিন তার ছায়া ছাড়া কোন ছায়া থাকবে না’। (মুসনাদে আহমদ, মুসলিম, ৪৬)।
আরেক হাদিসে মুয়ায ইবনে জাবাল রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলিতে শুনেছি, ‘আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার জন্য মহব্বতকারীদের জন্য নূরের মিম্বার রয়েছে, যা দেখে ঈর্ষা করবেন নবী ও শহীদগণ’। (সুনান তিরমিজি, মুসলিম, ৪৭)