আল্লাহর ভালোবাসা পাবেন যেভাবে

আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির প্রয়োজনানুপাতে কালক্রমে তাদের বিভিন্ন শরিয়ত দিয়েছেন। আর এর পূর্ণতা ও শুভ পরিসমাপ্তি করেছেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে। দীনের পূর্ণাঙ্গতা লাভের পর যেহেতু এতে কোনোরূপ সংযোজন ও বিয়োজনের প্রয়োজন নেই; তাই মানবজাতির জন্য নতুন শরিয়তেরও প্রয়োজন নেই। তাই আল্লাহতায়ালা নবী-রাসুল প্রেরণের ধারা চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছেন। এটা ইসলামের অন্যতম মৌলিক বিশ্বাস।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে-‘আজ আমি তোমাদের দীনকে পূর্ণতা দান করেছি, আর আমি তোমাদের জন্য আমার নেয়ামতকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি এবং দীন হিসেবে ইসলামকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছি।’ (সুরা মায়িদা : ৩)।

পবিত্র কোরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে-‘মুহাম্মদ তোমাদের মধ্যকার কোনো পুরুষের বাবা নন; তবে তিনি আল্লাহর রাসুল এবং সর্বশেষ নবী।’ (সুরা আহজাব : ৪০)।

তাই হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর আর কেউ নবী হবে না, আর কারোর ওপর অহিও অবতীর্ণ হবে না। এমনকি কারো ওপর এমন কোনো ইলহামও হবে না, যা দীনের ব্যাপারে প্রমাণ হতে পারে। তাওহিদ, রেসালাত, আখেরাত, নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, কোরআন, কেবলা, ইত্যাদি বিষয় যে পর্যায়ের অকাট্য ও সন্দেহাতীত দলিল দ্বারা সুপ্রতিষ্ঠিত, হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শেষ নবী হওয়ার আকিদাও অনুরূপ দলিল দ্বারা দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণিত।

এই আকিদা ও বিশ্বাস রাখা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক। রাসূল (সা.)-এর আনুগত্যের মাধ্যমে জান্নাত ও আল্লাহর রহমত পাওয়ার নিশ্চয়তা বিদ্যমান। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য করো, আশা করা যায়, তোমাদের প্রতি করুণা করা হবে।’ -সূরা আন নূর: ৫৬

তিনি আরও বলেন, ‘হে নবী! লোকদের বলে দাও, যদি তোমরা যথার্থই আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেবেন। তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।’ তাদেরকে বলো, ‘আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করো।’ -সূরা আলে ইমরান: ৩১
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আনুগত্য করার ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর নির্দেশনা এসেছে কোরআনে কারিমে। নবী করিম (সা.) এর কোনো ফয়সালা, নিয়মাবলী ও কার্যাবলীর ব্যাপারে সামান্যতম কোনো ভিন্নতার মনোভাব পোষণ করলে তারা মুমিন হিসেবে গণ্য হবে না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘না, হে মুহাম্মদ! তোমার রবের কসম, এরা কখনও মুমিন হতে পারে না, যতক্ষণ এদের পারস্পরিক মতবিরোধের ক্ষেত্রে এরা তোমাকে ফায়সালাকারী হিসেবে মেনে না নেবে, তারপর তুমি যা ফায়সালা করবে তার ব্যাপারে নিজেদের মনের মধ্যে যেকোনো প্রকার কুণ্ঠা ও দ্বিধার স্থান দেবে না, বরং সর্বান্তকরণে মেনে নেবে।’ -সূরা আন নিসা: ৬৫

হাদিসেও নবীর আনুগত্যের ব্যাপারে খুব জোরালো নির্দেশনা এসেছে। ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে আমার আনুগত্য করল সে আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে আমার হুকুম অমান্য করল সে আল্লাহর হুকুমই অমান্য করল। আর যে আমিরের আনুগত্য করল সে আমারই আনুগত্য করল। যে আমিরের আনুগত্য করল না সে আমাকে অমান্য করল।’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম

নবী করিম (সা.)-এর আনুগত্য ও তার অনুসরণ করা ওয়াজিব। সুতরাং জান্নাতি মানুষ হবার জন্য কখনই আল্লাহ এবং রাসূলের সামান্যতম বিরোধিতা করা যাবে না।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

হাদিসে সাহাবিদের খরগোশের গোশত খাওয়া নিয়ে যা বলা হয়েছে

নূর নিউজ

মাগফেরাতের ১০ দিনে যে আমলগুলো বেশি বেশি করবেন

নূর নিউজ

টানা ৪ মাসে হাতে লিখলেন কোরআন

নূর নিউজ