প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেঁচে যাওয়া প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, আল্লাহ যদি তার রহমতের চাদর দিয়ে নেত্রীকে সেদিন রক্ষা না করতেন তাহলে কোনো অঙ্কেই উনার বাঁচার হিসাব মিলে না।
আল্লাহ রহমতের চাদর দিয়ে নেত্রীকে ২১ আগস্টে রক্ষা করেছেন : মতিয়া চৌধুরী
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী। ফাইল ছবি
তবুও শব্দে উনার কানের পর্দা ফেটে গিয়েছিল। তারপরও নেত্রী এ শারীরিক কষ্টকে স্পোর্টিংলি নিয়েছেন, এর নামই নেতা।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, যারা নরপশু, পিশাচ তারা ছাড়া তার মতো (শেখ হাসিনা) উদার মানসিকতার সবাই তাকে পছন্দ করেন। তার যে মানুষকে কাছে টানার অদ্ভুত ক্ষমতা। তিনি বাংলাদেশের সবাইকে কাছে টানতে পারেন কিন্তু ওই সমস্ত জল্লাদদের তিনি কাছে টানতে পারেননি। পারার দরকারও নেই আমি মনে করি। ওই চেষ্টা না করাই ভালো। ওদের ব্যাপারে আমাদের শক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েই এগোতে হবে। ওদের মোকাবিলা করতে হবে। মোকাবিলা না করলে সাধারণ মানুষ নিগৃহীত হবে।
শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার কথা বলতে গিয়ে তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী মতিয়া বলেন, একটা কবিতা আছে, ‘আমি তোমাকে শ্রদ্ধা করতে চাই, তুমি শ্রদ্ধার যোগ্য হও। আমি তোমাকে ভালোবাসতে চাই, তুমি ভালোবাসার যোগ্য হও’। আমাদের নেত্রী, কার চাইতে বয়সে ছোট, কার চাইতে বয়সে বড়- এটা বড় কথা নয়; উনি শ্রদ্ধার যোগ্য বলেই আজকে সারা বাংলাদেশ এবং বিশ্বের বরেণ্য নেতাদের মধ্যে তিনি শ্রদ্ধা কুড়াবার মতো একজন ব্যক্তিত্ব।
প্রধানমন্ত্রীই সত্যিকার অর্থে দেশে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা অনেকেই জানি না যে আমাদের ভোটার লিস্টে আগে বাবার নাম ছিল। ইট ইজ শেখ হাসিনা অ্যান্ড শেখ হাসিনা- যিনি নাকি বাবার নামের সঙ্গে মায়ের নাম ভোটার লিস্টে আনার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এটা নিয়ে পার্লামেন্টে কিছুটা বিতর্কও হয়েছিল। সেখানে তিনি পরিষ্কার যুক্তি দিয়েছিলেন যে, হাশরের ময়দানে মায়ের নামে ডাকা হলে ভোটার লিস্টে মায়ের নাম থাকবে না কেন।
নিজের চোখে দেখা ২১ অগাস্টের বিভীষিকার বর্ণনা দিতে গিয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেন, সেদিন মিছিলে যাব বলে স্টেজ থেকে নেমে আমি সামনের দিকে এগোচ্ছি; এই সময় আইভি বলল যে, ‘আপনি আজকে মেয়েদের সঙ্গে যাবেন’। আমি তখন বললাম, ‘তোমার তো পায়ে ফ্র্যাকচার, তুমি জোরে হাঁটতে পারো না, মিছিলে তো তুমি পুরোটা যাবে না। আজকের মিছিলটা গুরুত্বপূর্ণ, আমি সামনের দিকে যাই। ব্যাংকের সামনের কদম গাছটার সামনে গিয়ে আমি দাঁড়িয়েছি। …আসলে আর্জেস গ্রেনেড সম্পর্কে আমার বিন্দুমাত্র ধারণাই ছিল না, মনে হয় পটকার মতো সাধারণ শব্দ। তেমন ধোঁয়াও নাই। কাজেই এই যে স্বাভাবিক একটা শব্দের ভেতরে এতো মরণ বা মৃত্যু লুকিয়ে ছিল- এটা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।
আইভি রহমান মৃত্যুবার্ষিকী পালন কমিটির সভাপতি এম এ করিমের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমীন, সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা আহমেদ।