মুহাররম চান্দ্রবছরের প্রথম মাস। সম্মানিত চার মাসের তৃতীয় মাস। হাদিসে এ মাসের অনেক ফজিলতের কথা উল্লেখিত হয়েছে। এ মাসে বেশি বেশি নফল রোজা ও তাওবা ইসতিগফারের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে-
أَفْضَلُ الصِّيَامِ، بَعْدَ رَمَضَانَ، شَهْرُ اللهِ الْمُحَرّمُ، وَأَفْضَلُ الصَلَاةِ، بَعْدَ الْفَرِيضَةِ، صَلَاةُ اللَّيْلِ
অর্থাৎ, রমজানের পর সবথেকে উত্তম রোজা হলো আল্লাহর মাসের রোজা, যে মাসকে তোমরা মুহাররম নামে চেন। আর ফরজ নামাজের পর সবথেকে উত্তম নামাজ হল রাতের নামাজ। (মুসলিম, হাদিস : ১১৬৩)
মুহাররমের গুরুত্বপূর্ণ একটি ফজিলত হলো, এর সঙ্গে তওবা কবুলের ইতিহাস যুক্ত। মুসনাদে আহমাদ ও জামে তিরমিজিতে বর্ণিত একটি হাদিসে আছে- এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে জিজ্ঞেস করল,
يَا رَسُولَ اللهِ، أَيّ شَهْرٍ تَأْمُرُنِي أَنْ أَصُومَ بَعْدَ رَمَضَانَ؟
আল্লাহর রাসূল! রমজানের পর আপনি আমাকে কোন মাসে রোজা রাখার নির্দেশ দেন? উত্তরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
إِنْ كُنْتَ صَائِمًا بَعْدَ شَهْرِ رَمَضَانَ فَصُم المُحَرّمَ، فَإِنّهُ شَهْرُ اللهِ فِيهِ يَوْمٌ تَابَ فِيهِ عَلَى قَوْمٍ، وَيَتُوبُ فِيهِ عَلَى قَوْمٍ آخَرِينَ
তুমি যদি রমজানের পর আরও কোনো মাসে রোজা রাখতে চাও তাহলে মুহাররমে রোজা রাখ। কেননা সেটি আল্লাহর মাস। সেই মাসে এমন একটি দিন রয়েছে, যেদিন আল্লাহ তায়ালা অনেকের তওবা কবুল করেছেন। ভবিষ্যতেও সেদিন আরও মানুষের তাওবা কবুল করবেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৫১)
এই হাদিসে যেই দিনের দিকে ইশারা করা হয়েছে খুব সম্ভব সেটি আশুরার দিন। তবে বান্দার উচিত বছরের সব দিনেই তওবা ইসতিগফারের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। বিশেষ করে এই মাসের প্রতিটি দিনেই তওবা ইসতিগফারের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়া। আর আশুরার দিন অনেক বেশি ইসতিগফার করা।
ইসতিগফারের জন্য সবথেকে উত্তম হলো কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত ইসতিগফার বিষয়ক দোয়াগুলো বুঝে বুঝে মুখস্থ করা। সেই দোয়াগুলোর মাধ্যমে রাব্বে কারীমের দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। তবে নিজের ভাষায় নিজের মতো করে ইসতিগফার করলেও ঠিক আছে। কারণ আল্লাহ সকল ভাষারই স্রষ্টা। তিনি সবার কথা বুঝেন। সবার আরজি কবুল করেন।