যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের ওপর তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে চায়। দেশটির রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কিকে এ বিষয়ে চুক্তি করতে হবে বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ। গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ইউক্রেনের পেছনে ব্যয় করা যুদ্ধের খরচ বাবদ দেশটির বিরল খনিজ সম্পদের দাবি করেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “রুশ আক্রমণ প্রতিরোধে কিয়েভের জন্য শত শত বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর বিনিময়ে ইউক্রেনের বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদের একটি অংশ পাওয়ার অধিকার রয়েছে ওয়াশিংটনের।”
ট্রাম্প আরও বলেন, “আমি ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বিরল খনিজ চাই। তারাও এতে রাজি হয়েছে। আমি বলেছি, আমাদের কিছু পেতে হবে। কারণ, আমরা এত অর্থ বিনা কারণে ব্যয় করতে পারি না।” তিনি বিনিময় ছাড়া নিরবিচ্ছিন্ন সহায়তাকে “বোকামি” বলেও অভিহিত করেন। তবে গত বুধবার ট্রাম্পের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেন জেলেনস্কি।
ওয়াশিংটনের হতাশা
গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে মাইক ওয়াল্টজ বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ অপমানের কারণে হোয়াইট হাউস ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর অত্যন্ত হতাশ।”
ইতিপূর্বেও মাইক ওয়াল্টজ বলেছিলেন, “যদি ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের খনিজ সম্পদের প্রবেশাধিকার দেয়, তাহলে কিয়েভ মার্কিন সহায়তা পেতে পারে। অথবা ইতিমধ্যে যে সহায়তা দেওয়া হয়েছে, সেটিকে এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ইউক্রেনীয়দের সত্যিকারের একটি ঐতিহাসিক সুযোগ দিয়েছি। এটি টেকসই এবং ইউক্রেনের জন্য সেরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা হতে পারে।”
জেলেনস্কির কড়া জবাব
তবে এমন প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে জেলেনস্কি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমি আমাদের রাষ্ট্রকে বিক্রি করতে পারি না।”
গত বৃহস্পতিবার কিয়েভে যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন-বিষয়ক প্রধান দূত কিথ কেলোগের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলেনস্কি। বৈঠক শেষে তিনি জানান, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা চুক্তিতে আগ্রহী, যা ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে সাহায্য করবে।”
এরপরই হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে মাইক ওয়াল্টজ জোর দিয়ে বলেন, ‘ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে মার্কিন অধিকার নিশ্চিতের জন্য চুক্তি জরুরি।'”
সংবাদ সম্মেলন বাতিল
কিয়েভে মার্কিন দূত কিথ কেলোগের সঙ্গে বৈঠককে ফলপ্রসূ বলে আখ্যায়িত করেন জেলেনস্কি। তবে শেষ মুহূর্তে দুজনের যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল হয়ে যায়। সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, “এটি মার্কিন সিদ্ধান্ত ছিল।”
এ বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি হোয়াইট হাউস।
সূত্র:বিবিসি নিউজ, রয়টার্স, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট