কখনো কখনো মনের মতো সব কিছ হয়, তখন মুমিনের উচিত আল্লাহ তায়ালার কৃতজ্ঞতা আদায় করা। কারণ, আল্লাহ তায়ালা কৃতজ্ঞ বান্দাদের প্রতি নিজের নেয়ামত বাড়িয়ে দেন।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَ اِذۡ تَاَذَّنَ رَبُّکُمۡ لَئِنۡ شَکَرۡتُمۡ لَاَزِیۡدَنَّکُمۡ وَ لَئِنۡ کَفَرۡتُمۡ اِنَّ عَذَابِیۡ لَشَدِیۡدٌ
‘আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সূরা ইবরাহিম, (১৪), আয়াত,৭)
কৃতজ্ঞ বান্দাদের সুসংবাদ জানিয়ে আল্লাহ তায়ালা আরেক আয়াতে বলেছেন,
سَیَجۡزِی اللّٰهُ الشّٰکِرِیۡنَ
‘…শিগগিরই আল্লাহ শোকর আদায়কারীদের প্রতিদান দেবেন।’ (সূরা আলে ইমরান, (৩), আয়াত, ১৪৪)
আবার কখনো মনের মতো সব কিছু ঘটে না। আর যখন মনের বিপরীত কিছু ঘটে তখন ধৈর্যধারণ করা উচিত মুমিনের। কারণ, মুমিনের এই ধৈর্যধারণেও আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এক হাদিসে হজরত আবু ইয়াহয়া সুহাইব ইবনে সিনান রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। ‘মুমিনের ব্যাপারটাই আশ্চর্যজনক। তার প্রতিটি কাজই তার জন্য ভালো। এটা মুমিন ছাড়া অন্য কারো জন্য নয়। যদি তাকে কল্যাণ স্পর্শ করে সে আল্লাহর শোকর আদায় করে। ফলে এটা তার জন্য মঙ্গলময় হয়। আর যদি তাকে ক্ষতি স্পর্শ করে সে ধৈর্য ধারণ করে। ফলে এটাও তার জন্য মঙ্গলময় হয়’। (মুসলিম)
আরেক হাদিসে হজরত আবু সাঈদ খুদরি ও আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মুসলিম ব্যক্তির ওপর যে সকল যন্ত্রণা, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকন্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানী আপতিত হয়, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে বিদ্ধ হয়, এই বিপদের মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)।
মনের বিপরীত এবং বিপদের সময় ধৈর্যধারণকারীদের সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
لَنَبۡلُوَنَّکُمۡ بِشَیۡءٍ مِّنَ الۡخَوۡفِ وَ الۡجُوۡعِ وَ نَقۡصٍ مِّنَ الۡاَمۡوَالِ وَ الۡاَنۡفُسِ وَ الثَّمَرٰتِ ؕ وَ بَشِّرِ الصّٰبِرِیۡنَ
‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব (কখনো) ভয়-ভীতি, (কখনো) ক্ষুধা দিয়ে এবং (কখনো) জানমাল ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দিয়ে, আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সূরা বাকারা, (২), আয়াত, ১৫৫)
এছাড়াও কখনো মনের বিপরীতে কিছু ঘটলে আল্লাহ তায়ালার সিদ্ধান্তের ওপর সন্তুষ্টি প্রকাশের জন্য হাদিসে বর্ণিত একটি দোয়া পড়া যেতে পারে। দোয়াটি হলো-
الحمد لله على كل حال
উচ্চারণ : আলহামদুলিল্লাহি আলা কুল্লি হাল
অর্থ : সর্বাবস্থায় আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা ও শুকরিয়া আদায় করছি। ( সুনানে ইবনে মাজা, হাদিস, ৩৮০৩, মুস্তাদরেকে হাকেম, হাদিস, ১৮৪০)