বর্তমান বিশ্বের পর্যটকদের অন্যতম আগ্রহ দুবাইয়ের শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদ। আমিরাতের সর্ববৃহৎ এই মসজিদের সুবিশাল প্রাঙ্গণ দেখে মুগ্ধ হয় সবাই। ১৯৯৪ সালে মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়।
২০০৭ সালে ৫৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে এর কাজ শেষ হয়। পারস্য, মোগল ও মরিশ স্থাপত্যশৈলীতে তৈরি নান্দনিক এই মসজিদে একসঙ্গে ৪০ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারে। তাতে প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটকের আগমন ঘটে।
অবাক করা ব্যাপার হলো, অবিকল এমনই একটি মসজিদ আছে ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের সোলো শহরে। ২০২১ সালের মে মাসে ঐতিহ্যবাহী এই শহরে আমিরাতের প্রায় দুই শ কোটি মার্কিন ডলার অর্থায়নে মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২৭ হাজার ৪৯২ বর্গমিটার আয়তনের মধ্যে ৮ হাজার ৪৪১ বর্গমিটার স্থানে মসজিদের মূল ভবনটি নির্মিত হয়।
মসজিদের মধ্যখানে একটি বড় গম্বুজের পাশে চারটি মাঝারিসহ মোট ৫৬টি গম্বুজ, চারপাশের চারটি মিনার ও মূল ভবনের ৩২টি স্তম্ভ মুগ্ধ করে দর্শকদের। এর মেঝেতে আছে অরনেট কাপড়, যা ঐক্যের প্রতীক মনে করা হয়। ইন্দোনেশিয়ার শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদে একসঙ্গে ১০ হাজারের বেশি মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন।
আমিরাতের প্রথম প্রেসিডেন্ট শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের নামেই মসজিদটির নাম ‘শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদ’ দেওয়া হয়েছে। মসজিদটি আমিরাত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি মানবতা ও সহনশীলতার মূল্যবোধ প্রচারের স্মারক। মসজিদ ঘিরে আঞ্চলিক ঐতিহ্য ও ইসলামী স্থাপত্যের ছাপ।
মসজিদটির মধ্যে একটি ইসলামিক সেন্টার রয়েছে। তাতে আমিরাত সরকরারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ইন্দোনেশিয়ার ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা আছে। ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মুহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর উপস্থিতিতে মসজিদটি উদ্বোধন করা হয়।
২০২০ সালে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের সম্মাননায় আমিরাতের কূটনৈতিক এলাকায় একটি মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দেন শেখ মুহাম্মদ বিন জায়েদ। তা ছাড়া দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের স্বীকৃতি হিসেবে আবুধাবির ন্যাশনাল এক্সিবিশন সেন্টারের পাশে আল-মারিদ স্ট্রিটের নাম পরিবর্তন করে প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো স্ট্রিট রাখা হয়।
১৯৭৬ সালে ইন্দোনেশিয়া ও আমিরাতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরু হয়। এর দুই বছর পর আবুধাবিতে ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাস খোলা হয়। সম্প্রতি দেশ দুটির মধ্যে অংশীদারিত্বমূলক অ-তেল বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার মাধ্যমে বিদ্যমান ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ১০ বিলিয়নে উন্নীত হবে।