পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি ও তার আইনজীবী আজহার সিদ্দিককে এক লাখ রুপি জরিমানা করেছে লাহোর হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে বুশরা বিবির করা একটি পিটিশনও খারিজ করে দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
শুক্রবার পাকিস্তান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
আলোচিত তোশাখানা মামলায় গত ১২ মার্চ ইমরান খানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন পাকিস্তানের একটি আদালত। সেই অনুযায়ী গত ১৪ মার্চ লাহোর পুলিশের একটি দল ইমরানের বাসভবনে তল্লাশি ও তাকে গ্রেফতার করতে এসেছিল; কিন্তু ইমরানের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) কর্মী-সমর্থকদের তীব্র বাধার মুখে খালি হাতেই ফিরে যেতে হয়েছিল পুলিশের সেই দলটিকে।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে পৃথক একটি মামলার শুনানিতে লাহোর হাইকোর্টে উপস্থিত হয়েছিলেন ইমরান খান। সেখানে তিনি বলেন, ঈদুল ফিতরের ছুটি চলাকালে তার জামান পার্কের বাসভবনে পুলিশি অভিযান চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। তিনি এ কথা বলার পর ইমরানকে ‘হয়রানি’ না করতে পুলিশকে নির্দেশও দেন আদালত।
ওই দিনের পরই ঈদুল ফিতরের ছুটি চলাকালে জামান পার্কের বাসভবনে পুলিশি তৎপরতায় স্থগিতাদেশ চেয়ে লাহোর হাইকোর্টে পিটিশন করেন ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি। লাহোর হাইকোর্টোর আইনজীবী আজহার সিদ্দিকের মাধ্যমে এই পিটিশন করেন তিনি।
পিটিশনে বলা হয়, ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ইমরানকে গ্রেপ্তার করতে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) ‘গোপন’ পরিকল্পনা করছেন। তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করতেই এই স্থগিতাদেশ প্রয়োজন।
সোমবার লাহোর হাইকোর্টের বিচারপতি সেলিম শেখের এজলাসে সেই পিটিশনের ওপর যখন শুনানি চলছিল, সে সময় দৃশ্যত বিরক্তি প্রকাশ করে বিচারক বলেন, ‘কেবলমাত্র আশঙ্কার ওপর ভিত্তি করে আদালত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না; আর পাঁচজন বিচারপতির বেঞ্চ যেখানে (ইমরানকে হয়রানি না করার) নির্দেশ দিয়েছেন, সেখানে কেন আপনারা ফের একই ধরনের পিটিশন জমা দিলেন? এটা একদম উচিত হয়নি। এই পিটিশন জমা দিয়ে আপনারা আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট করেছেন।’
আদালতের এই প্রতিক্রিয়ার পর বুশরা বিবির আইনজীবী পিটিশন প্রত্যাহার করে নেওয়ার আবেদন জানান। তিনি এই আবেদন জানানোর পরই পিটিশনটি বাতিল করে আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য বুশরা বিবি এবং আজহার সিদ্দিককে এক লাখ করে মোট দু’লাখ পাকিস্তানি রুপি জরিমানা করেন হাইকোর্ট।