আদর্শ সমাজ বিনির্মানে ইমামদের কর্তব্য ও করণীয় শীর্ষক জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২ মার্চ রাজধানী ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন হলে বাংলাদেশ আইম্মা পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ আইম্মা পরিষদের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আশরাফ মাসরূর এবং স্বাগত বক্তব্য বাংলাদেশ আইম্মা পরিষদের মহাসচিব মাওলানা এনামুল হক মুসা। এতে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খেলাফত আন্দোলনের আমীর আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী।
মাওলানা আশরাফ বিন রাব্বানী প্রবন্ধে মৌলিকভাবে বলেন, ইমামদের ধর্মীয় কাজের পাশাপাশি সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। বিতর্কিত বিষয় থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে। মসজিদকে সাধারণ মানুষের দ্বীন শিক্ষার মারকাজ বানাতে হবে এবং নিজেদের বক্তব্য হতে হবে দলিল ভিত্তিক, তথ্যনির্ভর, সাবলীল এবং গোছানো।
প্রধান অতিথি বলেন, আলেম-উলামা ও ইমামদের উচিৎ হবে বেনামাজিদের নামাজী বানানো। বেনামাজিদের নামাজী বানাতে পারলে সমাজ থেকে সকল অনৈতিক কর্মকান্ড অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যাবে। আল্লাহ তা’আলা কুরআনুল কারীমে বলেন, নিশ্চয়ই নামাজ সকল পাপাচার থেকে বিরত রাখে। তাই প্রতি সপ্তাহে দু-একজন করে বেনামাজিকে নামাজী বানাতে পারলে সমাজ থেকে সকল অনাচার দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর আল্লামা ইসমাঈল নূরপুরী পঞ্চগড়ে কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের সম্মেলন প্রতিহত করার ঘোষণা করে বলেন- ইসলাম এবং মুসলমানের ব্যানারে কাদিয়ানীরা সম্মেলন করতে পারবে না। এই কাদিয়ানীরা কাফের। তারা কাফের পরিচয় দিয়ে সম্মেলন করলে আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না।
বিশেষ অতিথি হিসেবে জামিয়া মুহাম্মাদীয়া আরাবিয়া এর মুহতামিম আল্লামা আবুল কালাম বলেন, দেশে ইমামদের অনেক সংগঠন আছে। সকল সংগঠনগুলোর সাথে সমন্বয়ে এক অভিন্ন হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি কাদিয়ানিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবীতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।
সভাপতি তার আলোচনায় প্রবন্ধের স্বার্থকতা তুলে ধরে বলেন, আদর্শ নাগরিক, আদর্শ পরিবার, আদর্শ সমাজ ও আদর্শ রাষ্ট্র তৈরিতে ইমামের ভূমিকা সর্বাধিক। এছাড়া তিনি পঞ্চগড়ে কাদিয়ানী সম্প্রদায় কর্তৃক অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া তিন দিনব্যাপী ইজতেমা বন্ধ করতে সরকারের নিকট জোর দাবী জানিয়ে বলেন, কাদিয়ানী সম্প্রদায় ইহুদি-খ্রিষ্টানের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইসলামের নাম ভাঙিয়ে ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্র ও মুসলমানদের ঈমান হরণের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে দীর্ঘকাল যাবৎ অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। এই ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আজ পঞ্চগড়ে কাদিয়ানিদের ইজতেমা বন্ধ করতে আলেম উলামা ও তৌহিদী জনতার যেই আন্দোলন চলছে, আমরা তার সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত জাতীয় সেমিনারে রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার পাশ্ববর্তী এলাকা সমুহের মসজিদের ইমামগন অংশ নেন।
এ সময় প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন, জামিয়া ইসলামিয়া মাখজানুল উলূম এর মুহতামিম মাওলানা জহুরুল ইসলাম, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, মাদরাসাতুল কাউসারের মুহতামিম মাওলানা সাঈদুর রহমান, মাওলানা যোবায়ের আহমদ, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, জাতীয় লেখক পরিষদের সভাপতি ডঃ মাওলানা শহিদুল ইসলাম ফারুকী, জাতীয় ইমাম সমাজের সভাপতি হাফেজ মাওলানা ক্বারী আবুল হুসাইন।
এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন, মাওলানা সলিমুল্লাহ খান, মাওলানা ফয়সাল আহমাদ, মুফতী মাহমুদুর রহমান, মুফতী ওমর ফারুক, মুফতী মুস্তফা কামাল, মুফতী যোবায়ের, মুফতী সুলতান মাহমুদ, মাওলানা আব্দুল্লাহ নাটোরী, মুফতি নুরুল ইসলাম, মাওলানা নূর মুহাম্মদ আজিজী, মাওলানা জামীল বিন আশরাফ, মুফতী আবু জাফর, মাওলানা সুলতান মুহিউদ্দীন, মাওলানা এমদাদুল হক, মাওলানা আমানুল্লাহ রায়পুরী প্রমুখ।