ইসরায়েলে এখনও লড়াই চালাচ্ছে হামাস, ঢুকছে আরও যোদ্ধা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর তীব্র হামলা ও ব্যাপক অভিযানের মধ্যেই এখনও ইসরায়েলের ভেতরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, সেনাবাহিনী এখনও ইসরায়েলের ভেতরে হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

এছাড়া হামাস যোদ্ধাদের এখনও ইসরায়েলে প্রবেশ করার বিষয়টি অস্বীকার করতে পারছে না আইডিএফ। অর্থাৎ এখনও ইসরায়েলে প্রবেশ করছে হামাস যোদ্ধারা। সোমবার (৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকার কাছে অবস্থিত ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের সাত থেকে আটটি স্থানে ইসরায়েলি বাহিনী এখনও হামাসের যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াই করছে বলে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী সোমবার সকালে এক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে।

ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, হামাসের যোদ্ধারা এখনও যেসব এলাকায় তীব্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তার মধ্যে বেইরি নামক একটি এলাকাও রয়েছে। ইসরায়েলের কৃষিপ্রধান এই এলাকায় হামাস যোদ্ধারা গত শনিবার ভোরেই প্রবেশ করেছিল।

আইডিএফ জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অনেক যোদ্ধা নিহত হয়েছে, কিন্তু অন্যরা এখনও কিবুতজের বাড়িগুলোতে লুকিয়ে আছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, তারা গাজায় এক হাজারেরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেচ্ট সাংবাদিকদের বলেন, ‘চলমান এই অপারেশনের পরিধি সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু… প্রতিরক্ষামূলক ও নিরাপত্তা ভঙ্গিতে পুনরায় ফিরে আসার আগে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সময় নিচ্ছি আমরা।’

এদিকে নতুন করে ইসরায়েলে ঢুকছে হামাসের আরও যোদ্ধা। বিবিসি বলছে, ইসরায়েলের গাজা সীমান্তে সীমানা বেড়ার ভেঙে ফেলা অংশগুলোর ‘বেশিরভাগই’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হলেও হামাস যোদ্ধাদের এখনও ইসরায়েলে প্রবেশ করার বিষয়টি অস্বীকার করতে পারছে না ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।

একজন মুখপাত্র বলেছেন, ইসরায়েল এবং গাজাকে পৃথককারী সীমান্ত বেড়ার মধ্যে ভেঙে ফেলা অংশগুলোর ‘অধিকাংশ’ পয়েন্ট প্রধানত ট্যাংক দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চাপ দেওয়া হলে ওই মুখপাত্র বলেন, যোদ্ধাদের এখনও ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করার বিষয়টি তিনি ‘অস্বীকার করতে পারেন না’।

এর আগে পৃথক ব্রিফিংয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) নিশ্চিত করেছে যে, ইসরায়েলি একটি পরিবার এখনও গাজার নিকটবর্তী কাফার আজায় যোদ্ধাদের হাতে জিম্মি রয়েছে। রোববার ইসরায়েলি সরকার বলেছে, ১০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলিকে ‘অপহরণ’ করা হয়েছে।

তারা বলেছে, এসব ইসরায়েলিদের বেশিরভাগকেই গাজায় নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার ভোরে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে আকস্মিকভাবে রকেট হামলা শুরু করে হামাস। হামলা শুরুর প্রথম ২০ মিনিটের মধ্যেই ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পাঁচ হাজারের বেশি রকেট নিক্ষেপ করে গাজার এই ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। পরে হামাসের শত শত যোদ্ধা স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ে বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়।

মূলত মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামের এই অভিযান শুরু করে হামাস।

হামাসের এই হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে ভূখণ্ডটির ৪৪ সেনাসদস্য রয়েছে। ফিলিস্তিনি এ গোষ্ঠীর হামলায় প্রথমে ২৬ সেনা নিহতের তথ্য জানিয়েছিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। হামলায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ২২০০ ইসরায়েলি।

অবশ্য ইসরায়েলি সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ এখনও অনেক সেনা নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া হামাসের সদস্যরা বেশ কয়েকজনকে আটক করে গাজায় নিয়ে গেছেন। সেখানে তারা কি অবস্থায় আছে সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

৬৬ দেশের ১ হাজার মুসল্লির ওমরাহ ব্যয় নির্বাহের সিদ্ধান্ত সৌদির

নূর নিউজ

যে দেশে রোজা না রাখলে গ্রেফতার করে পুলিশ

নূর নিউজ

হেফাজতের মদিনা শাখার ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

নূর নিউজ