আল্লাহর পক্ষ থেকে দেওয়া ফরজ বিধান পালন করা আবশ্যক। ফরজ বিধান পালন না করে উপায় নেই।হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় কেয়ামতের দিন বান্দার যে কাজের হিসাব সর্বপ্রথম নেওয়া হবে তা হচ্ছে নামাজ। সুতরাং যদি তা সঠিক হয়, তাহলে সে পরিত্রাণ পাবে। আর যদি (নামাজ) খারাপ হয়, তাহলে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
যদি তার ফরজের (ইবাদতের) মধ্যে কিছু কম পড়ে যায়, তাহলে আল্লাহ তায়ালা বলবেন, ‘দেখ তো! আমার বান্দার কিছু নফল (ইবাদত) আছে কি না, যা দিয়ে ফরজের ঘাটতি পূরণ করে দেওয়া হবে?’ অতঃপর তার অবশিষ্ট সমস্ত আমলের হিসাব ঐভাবে গৃহীত হবে। (আবু দাউদ ৮৬৪, তিরমিজি ৪১৩, ইবনে মাজাহ ১৪২৫)
নামাজে কেরাত পড়া ফরজ। ছোট তিন আয়াত অথবা ৩০ হরফ সম্বলিত বড় এক আয়াত পড়লে ফরজ আদায় হয়ে যাবে। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ, ততটুকু (নামাজে) আবৃত্তি কর। (সূরা মুযযাম্মিল-২০)
ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে সূরায়ে ফাতেহা এবং এর সাথে আরও একটি সূরা মিলানো ওয়াজিব। শেষ দুই রাকাতে শুধু সূরায়ে ফাতেহা পড়া সুন্নত।
আর ফরজ নামাজে সূরা ফাতেহার পর এক রাকাতে একাধিক সুরা মিলানো জায়েজ। তবে ফরজের এক রাকাতে একাধিক সূরা মিলানো অনুচিত। তবে নফল নামাজের এক রাকাতে একাধিক সূরা মিলানোতে কোনো অসুবিধা নেই। (সূত্র : হাশিয়াতুত তাহতাভি, পৃ. ৩৫২, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ৭/৯০)
নামাজে কেরাত সহী ও বিশুদ্ধ উচ্চারণে হওয়া আবশ্যক। অনথ্যায় এর কারণে নামাজ ভেঙে যেতে পারে। আলেমদের মতে, নামাজে কেরাতে ভুল করলে যদি এর কারণে অর্থ এতটাই পরিবর্তন হয়ে যায় যে, এই আয়াতের উপর কোনভাবেই বিশ্বাস করা যায় না। অর্থাৎ কোরআন শরীফের অর্থ, ইসলামী আকীদার বিরোধী কোন অর্থ দাঁড়িয়ে যায়। তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে।
আলেমরা আরও বলেন, কোনও আয়াতে শুধুমাত্র একটি হরফ ছেড়ে দেওয়ার দ্বারা কিংবা কোন শব্দ ছেড়ে দেওয়ার দ্বারা নামাজ ভাঙ্গে না। তবে ওই শব্দ ছাড়ার দ্বারা তার অর্থ পরিবর্তন হয়, তখন নামাজ ভেঙে যাবে।
তাই আলেমদের মতে, যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে কোনও না কোনভাবে যেন আয়াতের অর্থ সঠিক ধরা যায়। যদি কোনভাবে আয়াতের অর্থ সঠিক হয়, তাহলে নামাজ ভাঙবেনা। আর অর্থ পরিবর্তন হয়ে গেলে ভেঙে যাবে।