অনেক মানুষকে দেখা যায় ক্যাসেট বা কম্পিউটারে কুরআন তিলাওয়াত চালু করে অন্য কাজ করতে থাকে। তিলাওয়াত একেবারেই শুনছে না বা কাজের কারণে তিলাওয়াতের প্রতি মনোযোগ দিতে পারছে না। বা একটা কিছু শুনতে শুনতে কাজ করার অভ্যাস তাই তিলাওয়াত ছেড়ে রেখেছে। শোনা উদ্দেশ্য নয়। এ কাজটি ঠিক নয়। কুরআন তিলাওয়াত শোনা একটি স্বতন্ত্র আমল। আল কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, (অর্থ) যখন কুরআন তিলাওয়াত হয় তখন তোমরা মনোযোগ সহকারে তা শ্রবণ কর এবং চুপ থাক। যাতে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হয় (সূরা আরাফ, ২০৪) কিন্তু তিলাওয়াত ছেড়ে তা না শোনা এবং অন্য কাজে লিপ্ত থাকা কুরআনের এই হুকুমের খেলাফ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও অন্যের থেকে তিলাওয়াত শুনতে পছন্দ করতেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন, আমাকে তিলাওয়াত করে শোনাও। বললাম, আপনাকে কুরআন তিলাওয়াত করে শোনাব, কুরআন তো আপনার উপরই নাযিল হয়েছে! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমি অন্যের কাছ থেকে তিলাওয়াত শুনতে পছন্দ করি। আমি সূরা নিসা তিলাওয়াত করতে শুরু করলাম। যখন এই আয়াতে পৌছলাম-(অর্থ) ‘‘যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং আপনাকে উপস্থিত করব তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে, তখন কী অবস্থা হবে?’’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, থাম (হে আব্দুল্লাহ!)। আমি নবীজীর দিকে তাকিয়ে দেখি তার দুগন্ড বেয়ে অশ্রু ঝড়ছে। (দ্র. সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৫৮২
আল্লাহর কালাম তিলাওয়াত হচ্ছে আর আমি অন্যদিকে মনোযোগ দিব তা হয় না। সুতরাং তিলাওয়াত যখন শুনব তো মনোযোগ দিয়ে তিলাওয়াতই শুনব। আর কাজ করার সময় যদি কিছু শুনতেই হয় তাহলে গুনাহের কিছু না শুনে শরীয়তসম্মত গযল সংগীত শোনা যেতে পারে।