ঘুষ লেনদেনের মামলায় আট বছরের দণ্ড পাওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে জামিন দেওয়ার একদিন পর তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন প্রত্যাহার করে নতুন এই আদেশ দেন। মূল আপিল আবেদনের সঙ্গে জামিন আবেদন না থাকায় এ আদেশ দেওয়া হয়।
আদালতে এনামুল বাছিরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী, দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
এর আগের মঙ্গলবার দণ্ডের বিরুদ্ধে এনামুল বাছিরের আপিলের আবেদনের বিষয়ে শুনানি শেষে তাকে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন দিয়েছিল হাইকোর্টের এই বেঞ্চ।
কিন্তু সেই মূল আপিল আবেদনের সঙ্গে আলাদা করে বাছিরের জামিন আবেদন ছিল না, যা মঙ্গলবার জামিন আদেশ হওয়ার পর বিচারকের নজরে আসে।
এনামুল বাছিরের আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরীকে বিচারক বলেন, আইনজীবীদের কথা আমরা বিশ্বাস করি। এ কারণে আপনাদের কথার ওপর বিশ্বাস করে অনেক আদেশ দিয়ে থাকি। আপনি এনামুল বাছিরের আপিলের নথিতে জামিনের দরখাস্ত সংযুক্ত না করেই জামিন শুনানি করেছেন, এটি একটি অপরাধ।
জামিন আদেশ প্রত্যাহারের পর দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, মঙ্গলবার দুপক্ষকে শুনে আদালত এনামুল বাছিরকে জামিন দিয়েছিলেন। আজকে অর্ডারটি রি-কল করে মামলাটি আউট অব লিস্ট করে দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল এনামুল বাছিরের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলায় তার বিরুদ্ধে ৮০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড স্থগিত করে রায় সংক্রান্ত বিচারিক আদালতের যাবতীয় নথি তলব করা হয়।
এ মামলায় তিন বছরের সাজাপ্রাপ্ত পুলিশের বরখাস্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে গত এপ্রিলে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
একটি মামলা থেকে বাঁচার আশায় দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তাদের আসামি করে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করেন।
এর এক সপ্তাহের মধ্যে ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেফতার করে দুদক। এর পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। বাছিরকে গ্রেফতারের আগের দিন একই মামলায় পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা মিজানুরকে গ্রেফতার দেখায় দুদক। তাদের দুজনকেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
এ মামলার রায়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম দুইজনকে সাজা দেন।
রায়ে মিজানকে দণ্ডবিধির ১৬৫ ধারায় ৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর এনামুল বাছিরকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় ৩ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি মুদ্রা পাচার আইনের ৪ ধারায় ৫ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ৮০ লাখ জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সাজা দেওয়া হয়।