একাকী নামাজ আদায়কারীর পেছনে ইক্তেদা করা যাবে?

জামাতে নামাজ আদায়ের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে হাদিসে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘জামাতে নামাজের ফজিলত একাকী নামাজের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি।’

জুমার নামাজ ছাড়া অন্য যেকোনো নামাজেই ইমামের সঙ্গে একজন মুক্তাদি হলে জামাত হয়ে যায়। (সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর : ৬১৮, ইবনে মাজাহ ৯৬২)

পুরুষের জন্য ৫ ওয়াক্ত নামাজই জামাতে আদায় করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা; যা ওয়াজিবের সঙ্গে তুলনীয়। (অর্থাৎ এটি ওয়াজিবের কাছাকাছি)।’ (মুসলিম)

কোনো ওজর বা অপারগতা ছাড়া জামাত থেকে বিরত থাকা বৈধ নয়। যে ব্যক্তি জামাত ত্যাগে অভ্যস্ত হয়ে যায়, সে গুনাহগার হবে।’ (আবু দাউদ)

কোথাও যদি ইমামের পেছনে বড় জামাতে নামাজ অনুষ্ঠিত না হয়, অথবা কোনও মসজিদের মূল জামাত পাওয়া না যায়- তাহলে মসজিদে কোনও ব্যক্তি একা একা নামাজ আদায় করার সময় অন্য কেউ সেই ব্যক্তির পেছনে ইক্তেদা (তাকে ইমাম মেনে নামাজ শুরু) করতে পারবে। এভাবে ইক্তেদা করলে দুই ব্যক্তিরই নামাজ আদায় হয়ে যাবে।

এই ক্ষেত্রে আলেমরা বলেন, কোনো ব্যক্তি একাকী নামাজ শুরু করার পর তার পেছনে ইক্তেদা করা সহিহ আছে। কেননা কারো পেছনে ইক্তেদা করতে হলে ইমামের জন্য ইমামতির নিয়ত করা শর্ত নয়। বরং কেউ একা নামাজ শুরু করার পর অন্যের জন্য তার পেছনে ইক্তেদা করা সহিহ। তাই নামাজও শুদ্ধভাবে আদায় হয়ে যাবে।

যারা একাকী নামাজ আদায়কারীর পেছনে ইক্তেদা করবেন, তাদের সবাই জামাতে নামাজ আদায় করেছেন বলেই ধর্তব্য হবে। এছাড়াও সুন্নতে মুয়াক্কাদা বা ওয়াজিব তরকের গুনাহ থেকেও বেঁচে যাবেন সবাই।

এটা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, একদা রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে তাঁর রুমে নামাজ পড়ছিলেন। তাঁর রুমের দেয়াল ছিল নিচু। ফলে সাহাবিরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নামাজরত দেখতে পান এবং তাঁর পেছনে ইক্তেদা করে নামাজে দাঁড়িয়ে যান। সকালে বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। দ্বিতীয় রাতেও রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজে দাঁড়ালেন এবং সাহাবিরা তাঁর ইক্তেদা করলেন। (বুখারি : ১/১০১; ইলাউস সুনান : ৪/৩৩২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/৮১; রদ্দুল মুহতার : ১/৫৫০; বাদায়েউস সানায়ে : ১/৩৪৯)

তবে একা নামাজ আদায়কারী যদি বুঝতে পারেন যে, তার পেছনে কেউ ইক্তেদা করেছে, তাহলে ফজর, মাগরিব ও ইশার নামাজে শব্দ করে কেরাত পড়া জরুরি হয়ে যায়। কিন্তু ইমাম যদি বুঝতে না পারেন, শব্দ করে কেরাত না পড়লেও সকলের নামাজ সহিহ হয়ে যাবে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

পূজায় চাঁদা দেওয়া সম্পর্কে ইসলাম কী বলে

নূর নিউজ

কেন শিক্ষার্থী বাড়ছে মাদরাসায়

নূর নিউজ

কোরআনের ‘ওই সূরাটি’ বেশি পছন্দ, এভাবে বলা কি ঠিক?

নূর নিউজ