বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও দমন ও নির্বাচন বানচাল রুখতে দেড়শ দিন রাজপথে থাকার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনগুলো। নেতারা বলছেন, নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বরাবরের মতো ঢাকাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তারা।
সম্প্রতি বিশাল মহাসমাবেশের পর ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থানের ঘোষণা দিয়ে শাসক দলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় বিএনপি। তবে শেষ পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অবস্থানে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি বিরোধীরা।
নির্বাচন সামনে রেখে কোন কৌশলে এগোচ্ছে ক্ষমতাসীনরা? যারা এ কয়দিন মাঠে সক্রিয় ছিলেন, তারা বলছেন যেভাবেই হোক, সারাদেশের পাশাপাশি ঢাকাকেও দখলে রাখার মূলমন্ত্র তাদের।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বিএনপি যাতে জানমালের নিরাপত্তা হুমকি হয়ে না দাঁড়ায়, আবারও ২০১৩-১৪ এর মতো অগ্নিসন্ত্রাসের পথে অগ্রসর না হয়, আমরা জনতাকে সাথে নিয়ে সেগুলো মোকাবিলা করে আগামী সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকবো। ’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেছেন, ‘১৪ সালের সেই অবস্থানটি তাদের মধ্যে ভেসে আসে। আর আমরা আমাদের দেশের মানুষকে, ঢাকার মানুষকে জানান দিতে চাই-তারা যত কিছুই করুক, আমরা আপনাদের সাথেই আছি। দেড়শ দিন বা এই পাঁচ মাস, আমরা প্রতিদিন থাকবো। ’
২০১৪ সালে যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত ইসলামীকে নিয়ে নির্বাচন প্রতিহতের চেষ্টা করে বিএনপি। ওই সময়ে সারাদেশে গণপরিবহনে আগুন দেওয়ার অনেক ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য থাকলেও, মূল দায় চাপে বিএনপি-জামায়াতের ঘাড়েই। এমনকি টানা অবরোধ দিয়ে দেশকে অচল করার চেষ্টাও করে ওই জোট।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এম মান্নান কচি বলেন, ‘বিএনপি বিদেশিদের কাছে দেখাতে চায় যে, এদেশে নির্বাচনী পরিবেশ নেই। এই কারণেই তারা জ্বালাও-পোড়াও শুরু করেছে। আমরা আহ্বান করছি, নির্বাচনে আসেন। পরিবেশ নষ্ট করে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসবেন, সেই আশা আপনাদের পূরণ হবে না। বাংলার মানুষ সেটা হতে দেবে না। ’
এবারও সাংগঠনিকভাবে কিছুটা গুছিয়ে ওঠার পর ধীরে ধীরে শক্তি প্রয়োগের দিকে যেতে পারে বিএনপি। এমনটাই ভাবছেন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা। তারা বলছেন, এবার ঘটনার আগেই সব প্রতিহত করা হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেছেন, ‘সারা দেশ থেকে ঢাকা শহরকে তারা বিচ্ছিন্ন করবে, এটা কোন ধরনের রাজনীতি? তারা এ দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়। তাদেরকে মোকাবিলা করতে, আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকরা বিগত দিনে যেভাবে মাঠে ছিলাম, মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি, মানুষের জানমালের দায়িত্বে আমরা ছিলাম সেভাবে আগামী দিনেও থাকবো। ’
নেতাদের দাবি, ছাত্র, যুব আর স্বেচ্ছাসেবক লীগের তৎপরতার কারণে রাজপথের লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে ক্ষমতাসীনরা।