সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কটুক্তির তীব্র বিরোধিতা এবং নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রকৃত পক্ষে আওয়ামী লীগের যে স্বভাব ও চরিত্র তারা সন্ত্রাস করে ক্ষমতায় যায়। ঠিক একই ভাবে তারা আবারও আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।
আজ শুক্রবার সকালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দল ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি সরকার মো. নুরুজ্জামান নুরুর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহ সভাপতি আল মামুন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফসহ জেলা বিএনপির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ২০১৪ সালে তারা সন্ত্রাস সৃষ্টি করে জনগণের সাথে প্রতারণা করে ১৫৪টি আসনে বিনা ভোটে নির্বাচিত করে তারা ক্ষমতায় গিয়েছে। একই ভাবে ২০১৮ সালের নির্বাচনে সন্ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে নির্বাচন পূর্ব গায়েবি মামলা, নেতাকর্মীদের কারারুদ্ধ করা, বিরোধী প্রার্থীদের বন্দি, আদালত ও নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ফলাফল তাদের পক্ষে নিয়ে যায়। আওয়ামী লীগের এমন ইতিহাস পূর্ব থেকেই। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও তারা কাউকে ছাড় দেয় নাই।
আওয়ামী লীগ সবকিছুতে বল প্রয়োগ করে ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সংবিধানের মৌলিক ধারাগুলো পরিবর্তন করে সংবিধানকে আওয়ামী সংবিধানে পরিণত করেছে। ১৯৭৫ এ সংবিধান ক্যু করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনলে তা হাস্যকর ও জনগণের সাথে প্রতারণা করা হয়।
মহাসচিব আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন সংবাদপত্রের সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন তখন স্বাধীন সাংবাদিকতা থাকে না। একই ভাবে বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবীদ সম্পর্কে কটুক্তি করা বাংলাদেশ সম্পর্কে খারাপ ধারণা সৃষ্টি করে। বিএনপি বারবার অনুরোধ করে আসছে দেশের যে পরিবেশ খারাপের দিকে যাচ্ছে তা আরো খারাপ না করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা হোক। এ ছাড়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট তা থেকে উত্তোরণের কোনো পথ নেই।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরে মন্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ওবায়দুল কাদেরের কথা বিএনপি গুরুত্ব দেয় না। কারণ তার কোনো ক্ষমতা নেই। তিনি কোনো কিছু সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না। সিদ্ধান্ত দিতে হয় শেখ হাসিনাকে।
বিএনপি পচনশীল দল নয়, বিএনপি উচ্চ ও ঊর্ধ্বগামী দল তা প্রমাণ করার জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসে। সুতরাং ক্ষমতার বাইরে থাকলেই পচনশীল হয় না। আগামী নির্বাচনের জন্য কেয়ারটেকার সরকারের ফর্মূলা দেওয়া আছে। অন্যান্য দলের সাথে রাজনৈতিক ঐক্য চলমান রয়েছে, সময় হলে সকলেই জানতে পারবে।