আজ ১০ আগস্ট‘২৪, শনিবার, বিকাল ৩টায়, বাইতুল মোকাররম এর উত্তর গেইটে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর উদ্যোগে নৈরাজ্য প্রতিরোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন হেফাজত মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান।
সভাপতির বক্তব্যে হেফাজত মহাসচিব বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ২০১৩, ২০১৬ এবং ২০২১ সালে হেফাজতের নেতাকর্মীদের যারা নির্মমভাবে শহীদ করেছে, আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি হেফাজতের দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। শিক্ষা কারিকুলাম থেকে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক সকল বিষয় বাদ দিতে হবে। এছাড়া দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের এবং তাদের উপাসনালয়ের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। এই ব্যাপারে আমাদেরকে গুরুত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
১০ই আগস্ট‘২৪ নৈরাজ্য প্রতিরোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিত গণ সমাবেশ থেকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশেষ ঘোষণা পাঠ করেন হেফাজত নায়েবে আমীর মাওলানা মাহফুজুল হক।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কোটা সংস্কার ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শাহাদাত বরণকারী সকল শহীদদের মাগফিরাত কামনা করছে । আহতদের সুচিকিৎসায় সরকার ইতিমধ্যে যে ব্যবস্থা নিয়েছে তাতে সন্তোষ প্রকাশ করছে এবং এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। সেই সাথে তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার জন্য হেফাজতের নেতা-কর্মী, আলেমসমাজ ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে । এবিষয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে জোরালো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে । সেই সাথে হেফাজতে ইসলামের সকল শাখাকমিটিকে সাধ্যমত ভূমিকা রাখারও নির্দেশনা প্রদান করছে ।
হেফাজতে ইসলাম মনে করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনাসমূহের নামকরণের দায়িত্ব কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীবিশেষ কর্তৃক নিজেদের কাধে তুলে নেয়া সমিচীন নয়। এ বিষয়ে যে কোনো অভিপ্রায় কিংবা গণআকাঙ্খা প্রস্তাবনা আকারে উপস্থাপন করা যেতে পারে ।
রাষ্ট্রীয় কোনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির একটা প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে । কোথাও কোথাও বিদ্রোহ-বিশৃঙ্খলা ও তাকে কেন্দ্র করে জনমানসে বিক্ষোভ তৈরির চেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে । বর্তমান পরিস্থিতিতে এ যাতীয় বিক্ষোভ তৈরিতে হেফাজতে ইসলাম বিশ্বাস করে না।চলমান পরিস্থিতিতে দেশব্যাপি শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষাই হেফাজতে ইসলামের প্রধান লক্ষ্য ।সর্বস্তরের জনগণ, নেতা-কর্মী ও আলেম সমাজকে সর্বোচ্চ ধৈর্য ও সহনশিলতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার উদাত্ত আহ্বান যানাচ্ছে ।
রাষ্ট্রের যে কোনো প্রয়োজনে আলেমসমাজ কাজ করতে সদা প্রস্তুত। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে তাদের পরামর্শ ও মতামত নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
এ সময় মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন ও মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আজহারী এর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, মাওলানা আব্দুল হামীদ (পীর সাহেব মধুপুর), ড. আহমাদ আব্দুল কাদের, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মুফতী সাখাওয়াত হুসাইন রাজী, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী, মাওলানা জহুরুল ইসলাম, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মুফতি বশিরুল্লাহ, মাওলানা জালালুদ্দিন আহমদ, মুফতি জাকির হোসেন কাসেমী, মুফতি কামাল উদ্দিন, মুফতী মাসঊদুল করীম, মাওলানা গাজী ইয়াকুব, মাওলানা সানাুল্লাহ মাহমুদী, মুফতী নূর হুসাইন নূরী, মুফতি জাবের কাসেমী, মাওলানা জাকির হুসাইন কাসেমী, মুফতি রেজাউল করিম আবরার, মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা শামসুল ইসলাম জিলানী সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ।