আজ (২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং) রোজ বুধবার সকাল ১০ ঘটিকায় চাঁদপুর জামিয়া এমদাদিয়া জাফরাবাদ মাদরাসা মিলনায়তনে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখা কমিটির সভাপতি মাওলানা জাফর আহমাদের সভাপতিত্বে খতমে নবুওয়ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ সভাপতি আল্লামা জুনাইদ আল হাবিব এবং প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব আল্লামা মুহিউদ্দিন রাব্বানী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা জুনাইদ আল হাবিব বলেন, কাদিয়ানী সম্প্রদায় স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার। ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে যখন মুসলমানদের পক্ষ থেকে জিহাদ ঘোষণা করা হয় তখন মির্জা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হারাম ঘোষণা করে ফতওয়া প্রদান করে। এক সময় ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়। এরপর ভারত থেকে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। কিন্তু কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের অপতৎপরতা এবং মিথ্যাচারিতা থেকে এখনো আমরা মুসলমানরা স্বাধীন হতে পারেনি।
প্রধান আলোচক আল্লামা মুহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, খতমে নবুওয়ত সকল ইবাদতের মূল ভিত্তি। খতমে নবুওয়ত হেফাজত থাকলে সকল ইবাদত সংরক্ষিত থাকবে। তাওহীদ, রেসালাত ও আখেরাত নিয়ে তাবলীগের ভাইয়েরা সমাজের প্রতিটা স্তরে দাওয়াতের কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান থাকবে; তারা যেনো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খতমে নবুওয়ত এবং কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের ভন্ড মিথ্যা নবী দাবিদার গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী ও তার দোসরদের অপতৎপরতার মুখোশ উম্মাহ’র সামনে তুলে ধরেন। আমরা তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত একটি অরাজনৈতিক দ্বীনি সংগঠন। সমনে নির্বাচন। সেই নিবাচনে যেই দলই নবী প্রেমিক আপামর তৌহিদী জনতার ভোট নিজেদের পক্ষে পেতে চায়, তারা যেনো নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহারে কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করার ওয়াদা করেন। যারাই এই ওয়াদা দিবে আমরা তাদরকে নির্বাচনে সমর্থন করবো। আর এই কথা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট, এদেশের নির্বাচনে আলেম উলামা ও তৌহিদী জনতা যেই দলের দিকে সমর্থন দেয় তারাই বিজয়ী হয়।
বিশেষ অতিথি মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী উপস্থিত চাঁদপুর জেলার নেতৃবৃন্দের প্রতি উদাত্ত্ব আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা কমিটি নিজেদের অধীনে থাকা সকল থানা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডে যথাযথভাবে আক্বিদায়ে খতমে নবুওয়ত ও রদ্দে কাদিয়ানিয়্যাত শীর্ষক প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে চাঁদপুর জেলাকে কাদিয়ানী বিরোধী আন্দোলনের দূর্গ হিসেবে গড়ে তুলুন।
বিশেষ অতিথি মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী বলেন, কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, তারা এদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ সহ সংখ্যালঘু অন্যান্য ধর্মালম্বীদেরমত নিজেদের ধর্মীয় পরিচয়ে বসবাস করুক, তাতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তারা মুসলমানদের লিবাস ধারন করে এদেশের সরলমনা মুসলমানদের ঈমান হরণ করবে তা আমরা বরদাশত করতে পারিনা। আজকের সম্মেলন থেকে কাদিয়ানীদের অনতিবিলম্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করে মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা হেফাজত করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা জাফর আহমাদ উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও মেহমানদের প্রতি আন্তরিক মুবারকবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমরা কেন্দ্রের ঘোষিত সকল কর্মসূচি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করে ঐক্যবদ্ধভাবে খতমে নবুওয়তের কাজ করবো এবং চাঁদপুর জেলাকে কাদিয়ানী বিরোধী আন্দোলনের দূর্গ হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।
এ সময় মাওলানা আনোয়ারুল করীমের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, সহকারী মহাসচিব মুফতী কামাল উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক মাওলানা ইউনুস ঢালী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আশিকুল্লাহ, প্রচার সম্পাদক মাওলানা রাশেদ বিন নূর, সহ-প্রচার সম্পাদক মাওলানা মুমিনুল ইসলাম, সহ-প্রচার সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ, মুফতি সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা লিয়াকত হুসাইন, মাওলানা ত্বহা খান, মাওলানা নুরুল আমিন জিহাদি, মাওলানা ইদ্রিস, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মাওলানা শাহাদাত হুসাইন, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা মনির হুসাইন, মাওলানা ফারুক আহমাদ প্রমুখ।