কিয়ামতের দিন কত বড় হবে?

কিয়ামত দিবস কত বড় হবে বা এর দৈর্ঘ কতটুকু হবে এ নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,

یُدَبِّرُ الۡاَمۡرَ مِنَ السَّمَآءِ اِلَی الۡاَرۡضِ ثُمَّ یَعۡرُجُ اِلَیۡهِ فِیۡ یَوۡمٍ کَانَ مِقۡدَارُهٗۤ اَلۡفَ سَنَۃٍ مِّمَّا تَعُدُّوۡنَ

তিনি আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত সকল কার্য পরিচালনা করেন। তারপর তা একদিন তার কাছেই উঠবে। যে দিনের পরিমাপ হবে তোমাদের হিসাবে হাজার বছরের সমান। (সূরা সাজদাহ, (৩২), আয়াত, ৫, পারা, ২১)

অন্য আয়াতে বলা হয়েছে,

تَعۡرُجُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ الرُّوۡحُ اِلَیۡهِ فِیۡ یَوۡمٍ کَانَ مِقۡدَارُهٗ خَمۡسِیۡنَ اَلۡفَ سَنَۃٍ ۚ

‘ফেরেশতা এবং রূহ (অর্থাৎ জিবরীল) আল্লাহর দিকে আরোহণ করে এমন এক দিনে, যার পরিমাণ পঞ্চাশ হাজার বছর।’ (সূরা আল-মাআরিজ, (৭০) আয়াত, ৪ পারা, ২৯)

এ বিষযে হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদিসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, গরিব মুমিনেরা বিত্তশালী মুমিনের অর্ধবিদস আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে। পৃথিবীর হিসেবে এই অর্ধদিবসের পরিমাণ হবে পাঁচশত বছর। -(তিরমিজি, ২৩৫১)

আরেক হাদিসে আবু হুরায়রা রা. আরও বলেছেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পৃথিবীতে যেই সম্পদশালীরা জাকাত আদায় করেনি, কিয়ামতের দিন তাদের জমানো সম্পদগুলোকে উত্তপ্ত করা হবে জাহান্নামের আগুনে। এরপর সেগুলো বড় বড় পাথরের পাত বানানো হবে। আর সেই উত্তপ্ত পাথরের পাতগুলো দিয়ে তাদের পাঁজর ও কপালে দাগ দেওয়া হবে। কিয়ামতের দিন বিচার পর্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই শাস্তি চলতেই থাকবে। আর ওই বিচারপর্বের সময় হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। (মুসলিম, হাদিস : ৯৮৭)

আরেক হাদিসে আবু হুরায়রা রা. বলেন, মুমিনদের কাছে কিয়ামতের দিনের বিচারপর্বের সময়কে মনে হবে জোহর ও আসরের মধ্যবর্তী সময়ের সমান। (হাকেম,২৮৪ বায়হাকী, ছহীহাহ, ২৪৫৬, ছহীহুল জামে,৮১৯৩ )

একই বিষয়ে আরেক হাদিসে হজরত আবু সাঈদ রা. বলেন, আল্লাহর রাসূলকে কিয়ামতের বিচারপর্বের পঞ্চাশ হাজার বছর সম্পর্কে জিগেস করা হলে, তিনি বলেন, যার হাতে আমার জীবন, সেই পবিত্র সত্ত্বার শপথ! ঈমানদারদের কাছে ওই দিনকে পৃথিবীর ফরজ নামাজ আদায়ের সময়ের থেকেও কম বলে মনে হবে। (বায়হাকী, আহমাদ, ১১৭৩৫, ইবনু হিববান, ৭৩৩৪)

আল্লাম বাগবী লিখেছেন, ইবনে আবী মালিকা বলেছেন, একবার আমি হজরত উসমানের মুক্ত করা ক্রীতদাস আব্দুল্লাহ ইবনে ফিরোজকে সঙ্গে নিয়ে হজরত ইবনে আব্বাস রা. এক কাছে উপস্থিত হয়ে কিয়ামত দিবসের দৈর্ঘ ও পঞ্চাশ হাজার বছর নিয়ে জানতে চাইলাম। এর জবাবে তিনি আমাদের বললেন, এ বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই। তাই এ নিয়ে আমি চুপ থাকেই শ্রেয় মনে করি।

মুফাসসিররা বলেন, এর সহজ উত্তর হলো এই যে, সেদিনটি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হবে বিধায় মানুষের নিকট অতিশয় দীর্ঘ বলে মনে হবে। এই দীর্ঘানুভূতি নিজ নিজ ঈমান ও আমলানুপাতে হবে। যারা বড় অপরাধী তাদের কাছে সুদীর্ঘ এবং যারা কম অপরাধী তাদের কাছে কম দীর্ঘ মনে হবে। এমনকি সেদিন কিছু মানুষের কাছে এক হাজার বছর বলে মনে হবে, আবার কারো কারো নিকট পাঁচশত বছর বলে মনে হবে। আবার কারো কারো কাছে পঞ্চাশ হাজার বছর বলে মনে হবে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

পরিষ্কার হৃদয়ে পৃথিবী সুন্দর

আনসারুল হক

জিবরাঈল আ.- কে যেমন দেখেছেন মহানবী সা.

নূর নিউজ

ওমরা পালন শুরু হয় যেভাবে

নূর নিউজ