আমলকির একটি বিস্ময়কর ফল যার রয়েছে অসংখ্য গুণ। ত্বক ডিটক্স করার জন্য আমলকির জুড়ি নেই। রক্ত পরিশ্রুতও করে আমলকি। এ ছাড়া বিভিন্ন ভিটামিনের সমাহার ত্বক এবং চুলে পুষ্টিও জোগায়।
খালি পেটে আমলকির রস খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই প্রিয় এবং এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও অনেক। কারণ আমলকি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল এবং এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অনেকের ধারণা সকালে উঠেই খালি পেটে আমলকির রস পান রোগ প্রতিরোধ শক্তি ও মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। সর্দি-কাশি ছাড়া ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশানের হাত থেকেও রক্ষা করে।
তবে সব সময়ই কি খালি পেটে আমলকির রস পান করা নিরাপদ। নিচে দেয়া হল বিস্তারিত।
খালি পেটে আমলার রস পানের উপকারিতা
১. শরীর থেকে টক্সিক পদার্থ বের করে
খালি পেটে আমলকির রস পেট পরিষ্কার রাখে। এটি শরীরের হজম প্রক্রিয়াগুলিকে দ্রুত করে, যা টক্সিন দ্রুত বের করে। আমলকির রসে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেল মুক্ত করে।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
আমলকির রস শরীরের বিপাক প্রক্রিয়ার গতি বাড়ানোর কারণে ওজন কমাতে সাহায্য করে। খালি পেটে আমলকির জুস পান শরীরের বিপাক ক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে, যা শরীরে আরও ক্যালোরি পোড়াতে সহায়তা করে। এছাড়া এতে থাকা উচ্চ ফাইবার পেট পূর্ণতার অনুভূতি তৈরি করে যার ফলে অতিরিক্ত খাওয়া কমে।
৩. শরীর বেশি পুষ্টি শোষণ করতে পারে
খালি পেটে আমলকির রস খাওয়ার অভ্যাস পুষ্টির আরও ভাল শোষণে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে ভিটামিন সি। যখন পেট খালি থাকে, তখন আমলকির রস পানে শরীরে ভিটামিন সি পুষ্টির শোষণ ভালোমত হয়। এর ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে।
খালি পেটে আমলকির রস পানের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
১. অ্যাসিডিটি
যদিও আমলকি সাধারণত ক্ষারীয় প্রকৃতির তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে খালি পেটে আমলকির রস পানে অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাদের অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা গ্যাস্ট্রাইটিসের ইতিহাস রয়েছে তাদের জন্য এটি সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই ধরনের ক্ষেত্রে আমলকির রস পানের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেয়া উচিত।
২. টক স্বাদ
আমলকির রসের একটি শক্তিশালী টক স্বাদ রয়েছে যা খালি পেটে খাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় সমস্যার মনে হতে পারে। তাই এর টক স্বাদ পরিবর্তননের জন্য মধু মিশিয়ে পান করা যেতে পারে। এতে করে আমলকির রস আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা সহজ হতে পারে।
৩. শর্করা কমায়
খালি পেটে আমলকির রস পান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আর তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের আমলকির রস পানের আগে বুঝে শুনে পান করা উচিত। কারণ আমলকিতে একটি হাইপোগ্লাইসেমিক বা রক্তে শর্করা-হ্রাসকারী প্রভাব রয়েছে। যার মানে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয়। তাই যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের ডায়েটে আমলা জুস অন্তর্ভুক্ত করার আগে চিকিৎসকের সাথে কথা বলে নেওয়া উচিত।