চট্টগ্রামে কমছে ডায়রিয়া রোগী

রবিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য ওয়ার্ডে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কোনো শিশু ভর্তি হয়নি। জেলার ১৪টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেখানে ৬০০-এরও বেশি শয্যা রয়েছে, সেখানে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি আছে মাত্র ১২০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া ১৩৫ জনের মধ্যে ৭৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ১০৮ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়।

এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে ৭৩ জন। গত এক সপ্তাহে জেলায় ৮৬৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। এদের প্রায় সবাই সুস্থ হয়েছে। এমন তথ্য জানিয়েছে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।

সংখ্যার হিসাবে ডায়রিয়া রোগী কমেছে চট্টগ্রামে। দ্রুত সুস্থ হওয়ার হারও বেড়েছে। সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত জানুয়ারি থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত চার হাজার ২০২ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় চট্টগ্রামে। যার মধ্যে চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে আক্রান্ত হয় আড়াই হাজারেরও বেশি রোগী। প্রতিদিন গড়ে ১৫০ জন রোগী আক্রান্ত হয় ডায়রিয়ায়। রোগীর সংখ্যা কমায় স্বস্তি ফিরলেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন।

রবিবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, দুটি ওয়ার্ডে ১৪টি শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছে। তবে রবিবার সকাল ৮টার পর থেকে নতুন করে ওই দুই শিশু ওয়ার্ডে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত কোনো শিশু ভর্তি হয়নি। সেখানে ৯ মাস বয়সী শিশু শেখ মেহমেদকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাঈমা ইসলাম। শিশুটির হাতে স্যালাইন লাগানো ক্যানুলা রয়েছে। সাঈমা ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে শিশুটিকে কাশির জন্য ভর্তি করা হয়। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার দুদিন পর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। আবারও ভর্তি করতে হয়েছে। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন—বাচ্চাটা এখন সুস্থ আছে। ’ ওই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জগদীশ চন্দ্র দাশ বলেন, ‘গত কয়েক দিন আগে রোগী আরো বেশি ছিল। এখন (রবিবার সকাল ৮টা) পর্যন্ত দুটি শিশু ওয়ার্ডে মাত্র ১৪টি শিশু ভর্তি রয়েছে। ’

দুপুরে আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতালের শিশু ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অনেক শয্যা খালি রয়েছে। ৪২ শয্যার ওই ওয়ার্ডে ২৮টি শিশু চিকিৎসাধীন, যা গত সপ্তাহে ছিল শয্যার তুলনায় বেশি। সেখানকার কর্তব্যরত নার্স জানান, সকাল থেকে কোনো রোগী ভর্তি হয়নি।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস হাসপাতালে রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ১০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। সেখানে মোট ২৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন। সম্প্রতি সেখানে এক দিনে সর্বোচ্চ ৫২ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিল বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের কর্তব্যরত একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মোস্তফা মোহাম্মদ জামাল বলেন, ‘গত সপ্তাহে এক দিনে শিশু ও বয়স্ক মিলে সর্বোচ্চ ১৯ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি ছিল। আমরা মনে করেছিলাম চলতি সপ্তাহে রোগী বাড়তে পারে, তবে বাড়েনি। এখন ৯ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে চারজন নারী (প্রাপ্তবয়স্ক) ও পাঁচটি শিশু। ’

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক। পর্যাপ্ত পরিমাণে আইভি স্যালাইন মজুদ রয়েছে। তবে জনসচেনতার বিকল্প নেই। বিশুদ্ধ পানি পান, যত্রতত্র খাবার না খাওয়ার পাশাপাশি বাসি খাবার পরিহার করতে হবে। ’

এ জাতীয় আরো সংবাদ

লবণ কম খেলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমবে ৫০ শতাংশ

নূর নিউজ

কুমড়া ফুল খাওয়ার উপকারিতা

নূর নিউজ

যে ৫ লক্ষণে বুঝবেন নিঃশব্দে আসছে কিডনি রোগ

আনসারুল হক