জারির আত তাবারি (রহ.) হচ্ছেন সবচেয়ে সেরা তাফসিরের রচয়িতা। তিনি ৩০ হাজার পৃষ্ঠার একটি তাফসির লেখার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। ছাত্ররা ভয় পেয়ে যাওয়ায় তিন হাজার পৃষ্ঠার তাফসির লেখেন। জারির আত তাবারি (রহ.) চিরকুমার ছিলেন। আবু বকর আল আম্বারি (রহ.) সনদসহ ১২০টি তাফসির মুখস্থ বলতে পারতেন। কোরআনুল কারিমের অর্থ ও মর্ম জানার জন্য তিন লাখ কবিতার পঙক্তি মুখস্থ করেছিলেন। অবিবাহিত ছিলেন তিনিও। বউয়ের সঙ্গে নয়, বিধাতার নিবিড় সান্নিধ্য-সাধনা ও বইয়ের সঙ্গে সংসার পেতে অনেকে হয়েছেন ইতিহাসখ্যাত।
বস্তুত সন্তানদের মাধ্যমে পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে চায় মানুষ। অথচ সাধক মহামানব ও জ্ঞানতাপসদের কাছে বই-ই তাঁদের সন্তান। জ্ঞানের পত্ররস তাঁদের কাছে প্রেয়সীর গোলাপি গালের চেয়েও মধুময়। তবু তাঁরা কিন্তু বিয়ে ফরজ এটা অস্বীকার করেননি এবং কাউকে বিয়ে করতে নিষেধ করেননি। মহান আল্লাহর নির্দেশ—‘যাদের বিয়ের সামর্থ্য নেই, আল্লাহ তাদের নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ৩৩)
এ সামর্থ্য বলতে যেমন আর্থিক-শারীরিক সামর্থ্য বোঝায়, তেমনই সংযমের কারণ হতে পারে জ্ঞান ও আধ্যাত্মিক সাধনা এবং ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতা ও রহস্য। কেননা মানুষ তো চাঁদের মতো, যার একটা অন্ধকার দিক থাকে, যা সে দেখাতে চায় না।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ, কাপাসিয়া, গাজীপুর