রশীদ জামীল
সিটি অব দ্য ওয়ার্ল্ড খ্যাত নিউইয়র্কের টাইম স্কয়ার। প্রতিদিন, আরেকটু স্প্যাসিফিক করে বললে প্রতি সন্ধ্যায় হাজারো ছেলেমেয়ের বিনোদনের সাক্ষি হয় এই টাইমস স্কয়ার। রাত যত বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে কোলাহল! প্রতি বছর ফিফটি মিলিয়ন মানুষ টাইমস স্কয়ারে জড়ো হয় অথবা ঘুরে দেখে। ফিফটি মিলিয়ন! ক্যান ইউ ইমাজিন!
তবে আজকের সন্ধ্যাটা ভিন্ন ছিল। আজকের রাতটা একটু অনন্য ছিল। পবিত্র কুরআনের তিলাওয়াত এবং তাকবিরের ধ্বনিতে বারবার মুখরিত হল ঐতিহাসিক টাইমস স্কয়ার। ঝিরঝির বৃষ্টিতে স্নাত হল হাজারো নারী-পুরুষ।
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট (NYPD)’র সহযোগিতায় চমৎকার পরিবেশে হাজার হাজার মুসলমান জামাতের সাথে আদায় করল সালাতুত তারাবি। এর আগে, রামাদ্বানের ঠিক দুইদিন আগে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট পুলিশ প্লাজায় আয়োজন করেছিল ওয়েলকাম রামাদ্বান অনুষ্ঠান। মুসলমানদের সম্মানে প্রতি বছরই তারা এই আয়োজনটি করে থাকেন। এবারের আয়োজনের ব্যানার-শিরোনাম ছিল Welcome to the Annual Pre-Ramadan Conference.
আজ রোববার, ২৫ মার্চ ২০২৩, আয়োজনটা ছিল ইফতার থেকে। কয়েকশ মানুষ একসাথে বসে ইফতার করল টাইমস স্কয়ারে। আদায় করা হল মাগরিবের নামাজ। সন্ধ্যা থেকে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি হচ্ছিল। সাথে ছিল কনকনে ঠাণ্ডা। আবহাওয়াজনিত প্রতিকুলতা ডিঙিয়ে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকল মানুষ। তারাবির আগেই নির্ধারিত স্থানটি ভরে উঠল কানায় কানায়। একটু দেরিতে আসা মানুষ রাস্তার পাশে সাইডওয়াকে জায়নামাজ বিছিয়ে দাঁড়িয়ে গেল নামাজে। সাউন্ড সিস্টেমে উচ্চারিত হতে থাকল আল্লাহর কালাম। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার মানুষ চতুর্দিকে দাঁড়িয়ে বিস্মিত হয়ে দেখল মুসলমানদের এই অনুষ্ঠান!
চার রাকআত পরপর কয়েক মিনিট করে চলল বক্তৃতা। বিশ্ব মুসলিমের অবস্থা, অধিকার ও করণীয় নিয়ে জোরালো কণ্ঠে উচ্চারিত হল সাহসী কিছু কথাবার্তা। প্যালেস্টাইন, সিরিয়াসহ নির্যাতিত অথবা নিপীড়িত মুসলমানদের পক্ষে স্লোগান উঠল থেমে থেমে।
অত্যন্ত শান্ত ও সুশৃঙ্খলভাবে আদায় করা হল তারাবির নামাজ। ইসলাম শান্তির ধর্ম, মুসলমানরা শান্তিপ্রিয় জাতি- আজকের টাইমস স্কয়ারও সেটার সাক্ষি হল আবার।
লেখাটি লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।