টাইমিংয়ের অপেক্ষায় বিএনপি

ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচির পর কিছু ছেদ পড়েছে বিএনপি’র একদফার আন্দোলনে। একদফা দাবিতে এ পর্যন্ত আর কোনো কর্মসূচি দেয়া হয়নি। বলা হচ্ছে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আরও আলাপ-আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। দলীয় সূত্রের দাবি- নানা কারণে আগস্টে কর্মসূচি দেয়া হবে ভেবে-চিন্তে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তবে চূড়ান্ত কর্মসূচি আসবে সেপ্টেম্বরে। ওই সময়ে টানা কর্মসূচি দেয়ার চিন্তা রয়েছে। পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সময়ে সময়ে কর্মসূচি দেয়া হবে। সূত্র জানায়- বিগত কয়েকটি কর্মসূচির বিষয়াদি পর্যালোচনা করে সামনে কর্মসূচির ছক আঁকা হচ্ছে। যাতে কর্মসূচি পালনে কোনো ধরনের দুর্বলতা না থাকে।

নেতারা বলছেন, একদফার সামনের আন্দোলনে আরও বেশি দল ও মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়বে বলে তারা আশা করছেন। এজন্য সামনের কর্মসূচিও সেভাবে নেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একদফার আন্দোলনকে বেগবান করতে কৌশলে এগোতে চান। এ পর্যন্ত নেয়া পরিকল্পনা সফল হয়েছে বলেও মনে করেন তারা। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা পর্যবেক্ষণ করেই নতুন কৌশলে অগ্রসর হচ্ছেন দলটির নীতি-নির্ধারকরা। মূলত ঢাকাকে টার্গেট করেই সেপ্টেম্বরে আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপ দিতে কাজ করছেন। বিএনপি সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে শিগগিরই নতুন কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করার কথাও ভাবছেন নেতারা। সরকার পতন আন্দোলনে সেপ্টেম্বর মাসকেই ‘উপযুক্ত’ সময় হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ। নেতারা বলছেন, সরকার অক্টোবর মাসে তফসিল ঘোষণার কথা ভাবছে। তার আগেই বিরোধী দলগুলো সরকার পতনের দাবিতে মাঠে নামবে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে আরও কয়েকটি দল যুগপৎ আন্দোলনে আসতে পারে। তখন একদফা বৃহত্তর গণআন্দোলনে পরিণত হবে বলে মনে করছেন নেতারা।

এই মুহূর্তে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ রাখার উপর জোর দেয়া হচ্ছে। এজন্য নানা কর্মসূচি দেয়া হবে। চলতি মাসে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিলের মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে চায় বিএনপি। একদফা দাবিতে চলতি সপ্তাহে ঢাকায় নতুন কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে।

এনিয়ে গত কয়েকদিনে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করেছে বিএনপি। সেখানে একদফার আন্দোলন সফল করতে সমমনাদের পরামর্শও নিয়েছেন নেতারা। এসব বৈঠকে সেপ্টেম্বর মাসেই রাজপথে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগের বার্তা দেয়া হয়েছে। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, তফসিল ঘোষণার আগেই সরকারের পতন নিশ্চিত করতে লাগাতার কর্মসূচিতে যাবে দলগুলো। এজন্য যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে রাজপথে নামার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।

এদিকে, গত জুলাই মাসে একদফার আন্দোলন ঘোষণা করে বিএনপি। এর পরপরই ঢাকায় ব্যাপক জনসমাগম ঘটিয়ে মহাসমাবেশ করে দলটি। মহাসমাবেশ থেকে ঢাকার প্রবেশ মুখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। এদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়েন তারা। পরবর্তীতে নানা কর্মসূচি পালন করলেও একদফার কর্মসূচি নিয়ে সতর্ক অবস্থানে বিএনপি। দলীয় সূত্র বলছে, ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচিতে দলের অনেক নেতা নিষ্ক্রিয় ছিলেন। নির্ধারিত সময়ে নেতাকর্মীরা স্পটে উপস্থিত না হওয়ায় ঘোষিত কর্মসূচিতে ছন্দপতন ঘটে। সেসব অভিজ্ঞতা হিসাব-নিকাশ করে সামনে কর্মসূচির ছক সাজানো হবে।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতারা বলছেন, চূড়ান্ত আন্দোলনের দিনক্ষণ সেপ্টেম্বর ধরেই আবারো মাঠে নামছে সরকারবিরোধী দলগুলো। চলতি মাসে ঢাকাসহ বিভাগীয় ও জেলা শহরে সমাবেশ, অবস্থান, পদযাত্রা, রোডমার্চের মতো জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি আসতে পারে। আগামীকাল রাতে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নতুন কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

গতকাল বিএনপি’র সঙ্গে লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে এক নেতা বলেন, একদফা দাবি আদায়ে আগামী দিনে কি ধরনের কর্মসূচি দেয়া যায় এসব বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছে বিএনপি। সমমনা সবগুলো দলের সঙ্গে বৈঠক করে চলতি মাসেই ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি। বিএনপি’র ঘোষণা অনুযায়ী সমমনা দলগুলো কর্মসূচি ঘোষণা করে তা বাস্তবায়ন করবে।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, একদফার আন্দোলন চলমান রয়েছে। সরকারের পতনের দাবিতে বিরোধী দলগুলো একজোটে মাঠে নেমেছে। সবার একটাই চাওয়া- ক্ষমতাসীন সরকারের বিদায়। শিগগিরই সরকারের পতন ঘটবে। সেপ্টেম্বর মাসেই গণআন্দোলনে সরকার ভেসে যাবে। নতুন কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহে একদফার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে।

বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মানবজমিনকে বলেন, সরকারের পতন নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো আন্দালন করছে। একদফার আন্দোলন অনেকদূর এগিয় গেছে। আগামী দিনগুলোতে নতুন কর্মসূচি আসবে। বিএনপি যখন যে কর্মসূচি ঘোষণা দেবে সরকার বিরোধীদলগুলো একই ভাবে কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামবে। চলমান আন্দোলনকে আরও জোরদার করার জন্য আমরা সবগুলো দলের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আগামী দিনের করণীয় বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। এছাড়া ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। সংসদের বিরোধী দলগুলোর সঙ্গেও যোগাযোগ চলছে। ইনশাআল্লাহ্ এবার সরকারের পতন না ঘটিয়ে রাজপথ ছাড়বো না।

সূত্র: মানবজমিন

এ জাতীয় আরো সংবাদ

বর্ষা মৌসুম আসতেই বাড়ছে নদ-নদীর পানি

নূর নিউজ

আমি শেখ মুজিবের মেয়ে এটা মনে রাখবেন: প্রধানমন্ত্রী

নূর নিউজ

বিএনপি-জামায়াত ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা : হাছান মাহমুদ

নূর নিউজ