আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমমান ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বাংলাদেশের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল আরকাম আল ইসলামিয়ার ১০ জন মেধাবী শিক্ষার্থী সম্পূর্ণ স্কলারশিপ নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য মিশরের সুপ্রসিদ্ধ ও ঐতিহাসিক আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য সুযোগ পেয়েছেন। এবং এই অর্জন সম্ভব হয়েছে শায়খ মুহাম্মদ সানাউল্লাহ আল আজহারীর দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর।
প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় আল-আযহারের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক মুআদালার ( সমমান) মাধ্যমে এই অসাধ্য সম্ভব করেছে শায়েখ সানাউল্লাহ আজহারী পরিচালিত দারুল আরকাম আল ইসলামিয়া, ঢাকা।
গতকাল (১১মার্চ) শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি অভিজাত বুফে রেস্তোরায় স্কলারশিপপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বিদায়ী সংবর্ধনা ও সম্মাননা র আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। এতে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিশরের ডেপুটি হাই কমিশনার আয়মান কামাল হাম্মাদ ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুর রহমান খান নদভী , শায়খুল হাদীস আল্লামা আজীমুদ্দীন , এস এস টি এস বাংলাদেশের মহাপরিচালক ডঃ সাঈদ সাবরী সহ দেশ বরেণ্য উলামায়ে কেরাম, আজহারী স্কলারগণ, বিদেশি কূটনীতিবৃন্দ ও বিভিন্ন সংস্থা ও মাদ্রাসার পরিচালকগণ উপস্থিত হন।
স্কলারশিপপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আল্লামা নদভী বলেন, বেফাক তোমাদের সফলতায় গর্বিত। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা সারা বিশ্বব্যাপী ইসলামের সুমহান দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকুক। তোমরা দেশের গণ্ডিতে যেভাবে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছ আশা করব আন্তর্জাতিক মহলেও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মিসরীয় দূতাবাসের উপ হাইকমিশনার আইমান কামাল হাম্মাদ বলেন, বাংলাদেশ থেকে এ বছরও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী মিশরে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য গিয়েছে। শুধুমাত্র আল-আযহার নয় মিশরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা পড়াশোনার জন্য যাচ্ছে । মুআদালার দ্বিতীয়বারে ঢাকার দারুল আরকাম থেকে শিক্ষার্থীরা আল আজহারের উদ্দেশ্যে রওনা করছে। আমি স্কলারশিপপ্রাপ্ত সকল শিক্ষার্থীকে অভিনন্দন জানাই।
মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা শায়েখ সানাউল্লা আযহারী বলেন, কওমি শিক্ষার্থীদের বিশাল একটা অংশ আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে চান। কিন্তু সরকারি কোন প্রকার সার্টিফিকেট না থাকায় তাদের সময় অপচয় হয় এবং অনেক সময় সম্ভব হয়ে ওঠেনা। এজন্য জ্ঞানপিপাসু সে’সব শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আমরা আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সরাসরি মুআদালা করেছি। আমাদের এখান থেকে সানাবিয়া উলয়া পড়ে যে কেউ আল আজহারের যেকোনো বিভাগে ভর্তি হতে পারবে।
দারুল আরকাম আল ইসলামিয়া বাংলাদেশের একমাত্র কওমি মাদ্রাসা যার সঙ্গে সরাসরি মুআদালা ( সমমান) রয়েছে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাদের পথ চলার কয়েক বছরেই এমন অভাবনীয় সাফল্যে আনন্দিত চিন্তাশীল আলেমরা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক শায়খ জুবায়ের আহমাদ আজহারী বলেন, শায়েখ সানাউল্লাহ আযহারী এই সফলতা আমাদেরকে আনন্দিত করে। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর কাছে অসংখ্য শুকরিয়া তিনি বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য আল-আজহারের পথ আরো প্রশস্ত করেছেন। আশাকরি আমাদের শিক্ষার্থীরা ভালো কিছু উপহার দিবে।
দীনিয়াত বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মুফতি সালমান আহমদ বলেন, কওমী শিক্ষার্থীদের সামনে জ্ঞানের বিশাল এক দুয়ার উম্বোচিত হলো। একটি চমৎকার আয়োজন। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা আরো একধাপ এগিয়ে গেল। বিশেষভাবে শায়েখ সানাউল্লাহ আজহারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হয়। ধন্যবাদ সংশ্লিষ্ট সকলকে।
উল্লেখ্য যে, দারুল আরকাম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা থেকে এ বছর সর্বমোট ১০ জন শিক্ষার্থী সম্পূর্ণ স্কলারশিপে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। ইতিমধ্যে তাদের ফ্লাইট নির্ধারণ হয়েছে আগামী মে মাসের ২ তারিখে। আমরা তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।