পবিত্র মাহে রমযান মাস কুরআন নাজিলের মাস। শিক্ষার সর্বস্তরে এই মাসে কুরআন শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করুন। কুরআনের শিক্ষা না থাকায় সমাজে বিশৃঙ্খলা, হানাহানি, অস্থিরতা ও সহিংসতা তৈরি হচ্ছে। কুরআনের শিক্ষা থাকলে একটি শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে।
আজ শনিবার (১ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত মাহে রমযানের স্বাগত র্যালিতে কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রমযান আত্মশুদ্ধির মাস, আত্মগঠনের মাস, কুরআন নাজিলের মাস। এই মাসে মুমিনের জন্য রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সুসংবাদ রয়েছে। অথচ দুঃখজনকভাবে আমাদের দেশে রমজান আসলেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বাজার সিন্ডিকেটের অরাজকতা ও মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ব্যয় প্রকট আকার ধারণ করে। এটি একটি চরম অনৈতিক ও অমানবিক প্রবণতা।রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে এবং কৃত্রিম সংকট তৈরি করা চক্রকে আইনের আওতায় আনতে সরকারকে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করা শুধু ব্যক্তিগত দায়িত্ব নয়; এটি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বও।
তিনি আরও বলেন, যুবসমাজকে ইসলামী মূল্যবোধে গড়ে তোলা, সমাজে অপসংস্কৃতি ও মাদকমুক্ত পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করাও ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। রমজানের শিক্ষা নিয়ে আমাদের ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সত্য-ন্যায়ের পতাকা সমুন্নত রাখতে হবে। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ শিক্ষার্থীদের দ্বীন ও নৈতিকতার আলোকে প্রস্তুত করার পাশাপাশি সর্বদা ইসলামী মূল্যবোধ অক্ষুণ্ন রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, দেশে নতুন রাজনৈতিক শক্তি আত্মপ্রকাশকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু তাদের নীতি-আদর্শ এখনো স্পষ্ট নয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে ইসলামই সবচেয়ে বড় বাস্তবতা ও রাজনৈতিক অনুপ্রেরণা। জুলাই আন্দোলন ও আগস্টে ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানেও ইসলাম ছিলো চেতনা ও লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দু। সুতরাং, ইসলামবিরোধী কোনো এজেন্ডা এদেশের জনসাধারণ কখনো গ্রহণ করবে না। জনগণের আস্থা অর্জন করতে হলে ইসলামকে সম্মানের জায়গায় রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, রাখাল রাহাসহ কতিপয় ব্যক্তি আল্লাহ ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে চরম কটূক্তি ও গালিগালাজ করলেও এখনো তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ স্পষ্ট ভাষায় বলতে চায়- আমরা আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। তাঁর সম্মান রক্ষায় আমরা সর্বদা প্রস্তুত এবং প্রয়োজনে জীবন দিতেও দ্বিধাবোধ করি না।
অতএব, সরকারকে উদাত্ত আহ্বান জানাই-এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানসহ যেকোনো ধর্মের মানুষের বিশ্বাসে আঘাত হানে, এমন বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে এবং অপরাধ অনুযায়ী দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান এর সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুনতাছির আহমাদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ইমরান হোসাইন নূর, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল খায়রুল আহসান মারজান, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক হোসাইন ইবনে সরোয়ার, তথ্য-গবেষণা ও প্রযুক্তি সম্পাদক মুহাম্মাদ ফয়জুল ইসলাম, দাওয়াহ ও দফতর সম্পাদক মুহাম্মাদ ইবরাহীম খলীল, অর্থ ও কল্যাণ সম্পাদক এস এম কামরুল ইসলাম, প্রকাশনা সম্পাদক মাইমুন ইসলাম, যোগাযোগ ও মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক ইউসুফ পিয়াস, স্কুল ও কলেজ সম্পাদক মুহাম্মাদ আশিক আনোয়ার, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক রাগিব ওমর রাসেল, কওমি মাদরাসা সম্পাদক শেখ মাহদী ইমাম, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক আব্দুল আজিজ নোমান, কার্যনির্বাহী সদস্য মুহাম্মাদ তুহিন মালিক, কার্যনির্বাহী সদস্য ইবরাহীম নাসরুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত, ঢাকা মহানগর পূর্ব সভাপতি মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি আরিয়ান ইমন, ঢাকা মহানগর পশ্চিম সহ-সভাপতি সিফাতুল্লাহ, ঢাবি সাধারণ সম্পাদক সাইফ মুহাম্মাদ আলাউদ্দিনসহ ঢাকাস্থ মহানগর ও ক্যাম্পাস নেতৃবৃন্দ।