তাসবিহ ও তাকবির পাঠের ফজিলত

নামাজ, রোজা, জাকাত, হজের পাশাপাশি নফল ইবাদতের গুরুত্ব কম নয় ইসলামে। এই নফল ইবাদতই মানুষের আমলের পাল্লা ভারি করবে। কেয়ামতের দিন মানুষের ফরজ ইবাদতে ঘাটতি দেখা দিলে আল্লাহ তায়ালা নফল ইবাদতের মাধ্যমে তা পূরণ করবেন।

হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় কেয়ামতের দিন যদি বান্দার ফরজের (ইবাদতের) মধ্যে কিছু কম পড়ে যায়, তাহলে আল্লাহ তায়ালা বলবেন, ‘দেখ তো! আমার বান্দার কিছু নফল (ইবাদত) আছে কি না, যা দিয়ে ফরজের ঘাটতি পূরণ করে দেওয়া হবে?’ অতঃপর তার অবশিষ্ট সমস্ত আমলের হিসাব ঐভাবে গৃহীত হবে। -(আবু দাউদ ৮৬৪, তিরমিজি ৪১৩, ইবনে মাজাহ ১৪২৫)

তাই ফরজের পাশাপাশি বিভিন্ন নফল ইবাদত পালনের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করেন মুমিনরা। নফল ইবাদতের মধ্যে নামাজ, জিকির-আজকার ও বিভিন্ন তাসবিহ রয়েছে।

যেমন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজের পর সুবহানাল্লাহ (৩৩ বার), আলহাদুলিল্লাহ (৩৩ বার), আল্লাহু আকবার (৩৩ বার), (লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকা লাহু; লাহুল মুলকু; ওয়ালাহুল হামদু; ওয়াহুওয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির) (১ বার)- এমন বিভিন্ন তাসবিহ পড়তেন।

এই তাসবিহগুলো পাঠের মাধ্যমে সমুদ্রের ফেনারাশির মতো পাপ থাকলেও আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন বলে হাদিসে উল্লেখ করেছেন। -(মুসলিম, হাদিস : ১২৪০)

হাদিসের আলোকে বিভিন্ন তাসবিহ পাঠের ফজিলত তুলে ধরা হলো—

মিজানের পাল্লায় ভারী

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দুটি কালিমা যা মুখে উচ্চারণে অতি হালকা মিজানের পাল্লায় ভারী, আল্লাহর নিকট খুব পছন্দনীয়। তা হলো-

سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ، سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيمِ

উচ্চারণ : সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আযিম

অর্থ : আমি আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি তাঁর প্রশংসা সহকারে, আমি আল্লাহর মহত্ব ঘোষণা করছি’ (বুখারি, হাদিস :৬৬৮২)।

জান্নাতের রত্নভান্ডার

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জান্নাতের রত্নভান্ডারের একটি হলো-

لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ

উচ্চারণ : লা-হাওলা ওয়ালা-কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ

অর্থ : আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং (সৎকাজ করার কোনো শক্তি কারো নেই’ (বুখারি, হাদিস : ৬৩৮৪)।

সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ গুনাহ মাফ

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন ১০০ বার এই দোয়া বলবে, তার অপরাধসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়।’

سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِ

উচ্চারণ : সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী

অর্থ : আমি আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি তাঁর প্রশংসা সহকারে। (বুখারি, হাদিস : ৬৪০৫)।

১০০ নেকী

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যহ ১০০ বার এই দোয়া বলবে, সে ১০ জন দাস মুক্ত করার সমান সাওয়াব পাবে, তার জন্য ১০০টি নেকী লেখা হবে, ১০০টি অপরাধ ক্ষমা করা হবে, ওই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তান থেকে নিরাপদ থাকবে এবং সে সবচেয়ে বেশি মর্যাদার অধিকারী হবে।’

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اَللهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ

উচ্চারণ : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ-দাহু লা-শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির।

অর্থ : আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো সত্য ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোনো শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসাও তাঁরই, আর তিনি সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান । (বুখারি, হাদিস : ৩২৯৩)।

আল্লাহর প্রিয় চার বাক্য

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা প্রিয় বাক্য চারটি। আর এ চারটি বাক্য পাঠ করা তাঁর নিকট সমগ্র পৃথিবী অপেক্ষা প্রিয়তর। বাক্য চারটি হলো-

১. سُبْحَانَ اللهِ (আমি আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি)

২. اَلْحَمْدُ لِهِٰ (সকল প্রশংসা আল্লাহর)

৩. لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ (আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য ইলাহ নেই)

৪. اَللهُ أَكْبَرُ (আল্লাহ সর্বমহান)।(মুসলিম, হাদিস : ২১৩৭)

এ জাতীয় আরো সংবাদ

তথ্য ফাঁস করলে আল্লাহ যে শাস্তি দেবেন

নূর নিউজ

উদাসীনতার সাথে দোয়া করা

নূর নিউজ

কফ গিলে ফেললে রোজা ভাঙবে?

নূর নিউজ